বহু পথ ছুটে ট্রেনখানি এল
শহরের জংশন;
সকালের শীত দূর হয়েছে-
নামিবে যাত্রী তখন।


'আঠাশেতে ট্রেন, 'কুড়িতে ঢুকিল
সময় ভালোই আছে;
ধীরে ধীরে সবে নেমে বুঝি যায়
জিনিস সকল কাছে।


নামিবার কালে নামার পথেতে
কে যেন রেখেছে থলে;
এক বাবু এসে খুব রেগে যায়
করেনি করুণা ভুলে।


এক লাথি মেরে নীচে ফেলে দেয়
থলে হয় এলোমেলো;
গরীব যাত্রী নীচে নেমে যায়
সে সব কিছু গোছালো।


সে শুধু দেখে, কথা নাই মুখে
কী যে তার অপরাধ!
ভদ্র সে জন চিৎকার করে
পারিলে তুলিবে হাত।


বাবুটির কাছে তিনখানি ব্যাগ
একখানি আছে পিঠে;
ডানে সুটকেস, বা হাতে লাগেজ
ঠেলে ঠুলে দেখি ছোটে।


পরা ব্যাগখানি গরীব তুলিল
রাখিল আবার সেথা;
লোক নেমে যায় ট্রেন ফাঁকা হয়
কারো নেই অসুবিধা।


ক্রুব্ধ সে বাবু উঠিল আবার
আবার বকিল তারে;
তাকে বকে-মেরে সরিয়েই দিল
লাথি মেরে বারেবারে।


হায় মোর দেশ! দেখেও দেখে না
সব হল আজ মিথ্যা;
"সকলের তরে সকলে আমরা"
বাস্তব যে অগত্যা।


ধনীরা সবাই সম গোত্রীয়
দেখাতে ভালোই জোটে;
গরীবের থলে লাথি খায় শুধু
জায়গা পায় না মোটে।


ধনীর লাগেজ বড়ো সুন্দর
ঝুলিয়েছে তারে তুলে;
গরীবের থলে রাখিবে কোথায়!
চেপে চুপে ঠেলে ঠুলে।


মুখেতে ভাষণ- গরীব বন্ধু
গরীব আমার সাথি;
শহরের বাবু সেও তো চাকুরে
দরিদ্রে মারিছে লাথি।
       -------