সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ১১ (২৩/১০/২০১৮) অংশের পর-


             ।।১২।। ছোটোবেলাকার তুমি
মনে পড়ে আজ তোমার কথায়, ছোটোবেলাকার তুমি;
সকল গল্প তুমিই বলেছ শুনেছি নীরবে আমি।
বাবা মা'র ঘরে প্রিয় ছিলে তুমি কাঁদিত তোমায় ছাড়া
তোমার জন্ম মুরশিদাবাদ গ্রাম নওদাপাড়া।
তোমার জীবন ছিল প্রতিকূল যখন বয়স ছয়;
তোমার বাবায় তোমার মায়েতে বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
স্কুল শিক্ষক বাবাটি তোমার করিল আবার বিয়ে-
বড়ো হলে তুমি সয়ে কত জ্বালা সংগ্রাম সাথে নিয়ে।


তোমার মায়ের করুণ মুরতি করুণ সেই যে চোখ;
মামা, মাসিতেই বড়ো হলে তুমি ভুলিয়া শিশুর শোক।
কখনও বা তুমি বাবার কাছেতে কখনও মায়ের ঠাই;
পরেতে তোমার আরও দুটি বোন আরও আছে এক ভাই।
ছোটো থেকে তাই কঠিন জীবনে তোমার বড়োটি হওয়া
তোমার মুখেতে মায়ার মুরতি কেবলই দুঃখ সওয়া।
অনেক অভাব পেয়ে গেছ তুমি হারিয়ে সে ভালোবাসা;
সে কচুরিপানা ভাদরের বাণে তার চোখে আর আশা!


ছোটো থেকে তুমি পড়ালেখা সাথে ভীষণ মেধাবী ছিলে-
রাত জেগে কত গল্প করেছ যাব কী সহজে ভুলে!
তোমার আম্মা মাকসুদা বেগম স্বপ্ন দেখত চোখে-
মেয়েটি তাহার বড়ো হয়ে জানি ভুলাবে আপন শোকে।
সেদিন বাবার সেই অবহেলা জবাব দেবে যে মেয়ে
সেই আসাতেই পথ পানে চাওয়া, বসে থাকা পথ চেয়ে।
মামা মাসিতেই স্বপ্ন যে ঘেরা তাদের উঠানে চেনা
সেই মেয়ে আজ ভুলিয়েছে এসে মায়ের জীবন দেনা।


আমরা ছিলাম একসাথে প্রিয় চারভাই সাথে বাপ মা;
দ্বিতীয় কুমার আমিই ছিলাম কষ্টের পড়াশোনা।
জলঙ্গী গ্রামে আমার আবাদ সেখানে জন্মভূমি;
সেই ঘরে তুমি এলে বধূ হয়ে তুমি শুধু নও তুমি।
বাবা গত হন রোগ-শোক সয়ে এখন আছেন মা-;
তোমা কথা ছাড়া তার মুখে আর কিছুটি যে আসে না।
তুমি বধূ ছিলে ঘরের প্রতিমা সবাকার প্রিয়জন;
উনিশ বছরে আমার ঘরেতে খুশি ছিল সজ্জন।
                    -------
** চলবে।