সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ১৪ (২৬/১০/২০১৮) অংশের পর-


             ।।১৫।। আপন মাটির বুকে
তোমার দেহটি আমার কাঁধেতে স্বপ্নে ভাবিনি আমি-
অবশেষে আজ ঋণী করে গেলে হতভাগা এই স্বামী।
একসাথে শুধু পথ হেটে গেছি দুজনায় পাশাপাশি
জীবনের কথা সকলই বলেছি তোমার কাছেতে আসি।
সেই প্রিয় তুমি আমার কাঁধেতে তোমার সকল ধার
আর কোনোদিন তোমার এ ছোঁয়া অবারিত পারাপার।
তুমি প্রিয় আজ মুক্তি পেয়েছ আমাকে দিয়েছ সাজা;
রানির রূপেতে চলে গেলে তুমি আমি যে ভিখারি রাজা।


আজকে বুঝেছি তোমার এ দেহ কতটা লেগেছে ভারি!
আমার কাঁধেতে ভালোবাসা আজ যাতনা সয়েছি তারই।
মন থেকে সায় দেয় না যে প্রিয় ভীষণ কঠিন বোঝা!
চোখের জলের প্রতিটি ফোটায় সেই ভার আজ খোঁজা।
এ মনের মাঝে প্রাণ স্পন্দন দেহ বহনের দায়-
কতই বা ভারি তবুওতো নেই আমার মনের সায়।
এই বুকে ছিল তোমার কুঞ্জ সাজানো নানান ফুলে,
আমার কাঁধেতে তোমার ও দেহ কখনো উঠেছে দুলে।


সব প্রিয়জন নিয়েছে তোমারে আমার নিয়ম মতে;
শেষশয্যায় রাখিব তোমায় নীরব অশ্রুস্রোতে।
পবিত্র সেই কবরস্থান জন্মভূমির মাঠ;
শেষ ঠিকানায় শেষের বিরাম গোপালপুরের ঘাট।
মোর প্রিয় জন রয়েছে সেথায় সেথায় ঘুমায় সুখে;
তাদের কাছেতে থাকিবে প্রিয়তি আপন মাটির বুকে।
যতনে সাজিয়ে আমরা সেদিন রেখেছি আসল ঘরে
সেই কথা আজ করুণ হৃদয়ে তোমাকেই মনে পড়ে।


যতবার যাব ওই পথে প্রিয় তাঁকাব সেদিক ঘুরে;
চোখের পলকে ভাসবে যে তুমি থাকিব না আমি দূরে।
প্রদীপ জ্বালিব বেদনার ছায়ে তোমাকে করিব খুশি;
এক ফোটা জল কবর মাটিতে ফেলিব সেখানে বসি
চিরঘুমে তুমি শেষ সমাধিতে নামটি সেখানে লেখা
গোপালপুরের এই ঠাঁই মাঝে আবার হইবে দেখা!
সেদিন আমরা এই মাটিতেই একসাথে পাশাপাশি
শুধু ভালোবাসি কবরের মাটি আঁধার রাতেতে হাসি।
           -----------
** চলবে।