সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ১৫ (২৭/১০/২০১৮) অংশের পর-


             ।।১৬।। পরামর্শ আর সান্ত্বনা
সবাই বলেছে শক্ত হতেই, এটাই তো স্বাভাবিক!
এছাড়া যে আর নেই সান্ত্বনা এই কথা বুঝি ঠিক।
ক্ষতটা যে বড়ো ভীষণই বড়ো কেমনে সহ্য হয়!
ভুলতে যে কিছু দেরি হবে প্রিয় ক্রমাগত নিশ্চয়।
তোমার শেষের পরিণতি ছিল ভাবতে পারিনি প্রিয়-
ভাবতে পেরেছি এটুকু শুধুই পরিবেশ কত রূঢ়!
কেন আজ হল ভয়াল বেদন, নিঠুর পরিস্থিতি
প্রাণটা যদিও থাকত তোমার হোক সে অন্য ক্ষতি।


আমরা অবুঝ মন মানে নাই মনই তো সর্বস্ব;
হে শক্তিমান, দেখেছেন সব সাজিয়েছেন এ বিশ্ব।
তবুও স্মৃতিতে তোমাকেই ভাবি কতই তোমার সঙ্গ
এই পরিণাম মেনে নিতে হবে এ যে ইমানের অঙ্গ।
অনেকে কেঁদেছে বন্ধু-প্রিয়তি আমিও বোঝাই তারে
তোমার অভাব তাদের মনেতে এসে গেছে বারেবারে।
যখন সবাই বুঝে গেছে সব এ করুণ নিবেদন
শিশুদের পানে তাকাতে পারেনি দেখেছি কিছুক্ষণ!


আমার বন্ধু, তোমার বন্ধু পিঠেতে দিয়েছে হাত
কোলে তুলে নেয় কোলের শিশুকে করে এসে সাক্ষাত
প্রতিবেশী আজ বেশি আসে বুঝি খোঁজ নেই বারেবারে;
কখন কোনটি কাজেতে লাগিবে নজর শিশুর ধারে
আজ সবে যেচে কথা বলে গেছে যারা চিনিত আমায়;
একটি শোকেতে সবাই মিশেছে এক সেই ঠিকানায়।
সারাদিন ধরে ফোন বেজে গেছে নানান কথার সুরে-
বুঝেছি তখন তুমি আছ কাছে, নও বুঝি মোটে দূরে।


আজকে সয়েছি ছেলের আদর নিজের ইচ্ছা নেই;
অসম লড়াইয়ে হেরে গেছি আমি জয়ী ছেলে আসলেই।
আত্মবিশ্বাস বাড়াই যে তার, এটাই ছিল কৌশল;
ভীষণ লড়াইয়ে জিতে থাকি মোরা এই শুধু করি ছল!
মায়ের অভাব পূরণ হবে না ফিরবে কতক দিন;
কত ক্ষতি আজ হয়ে গেল শেষে শিশুমনে চিরঋণ
আমার এ ক্ষত, মেয়ের সে ক্ষত, ক্ষত যে সবার বুকে-
এ পরামর্শ আর সান্ত্বনা আমাদের প্রতি ঝুকে।
         --------
** চলবে।