সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ০১ (১৩/১০/২০১৮) অংশের পর-


               ।।২।। উনত্রিশ জানুয়ারি
হ্যাঁগো প্রিয়তমা, আমিই বলছি তোমার পাগলসোনা;
শুনছ কি তুমি! শুনছ সুফিয়া, আমার আঁখির কোণা।
চলে গেলে তুমি তোমার দেশেতে শেষবার হল কথা;
সারাটি জীবন কেমনে কাটাব মনেতে অনেক ব্যথা।
সেদিন ছিল যে শীতের সকাল উনত্রিশ জানুয়ারি;
আঠারো সালের এমন দিবস আর কি ভুলিতে পারি!
সপ্তাহ শুরু সোমবার ছিল প্রথম কর্ম দিন;
সে পাঁচটাতেই ঘুম থেকে ওঠা যথার্থ অমলীন ।


পাঁচটা তিরিশ, চায়েতে চুমুক নাস্তা ছিল সাজানো;
তারপরে আর তিরিশ মিনিট এক সাথেতে কাটানো।
ছ'টা দশে বাস, ছ'টা পাঁচ বাজে দুজনে বেরিয়ে পড়া-
মিনিট পাঁচেক পথ চলা শুরু, এক সাথে হাত ধরা ।
তুমি যেয়ে ওই বাসেতে উঠেছ শীতের দেয়ালে কাঁচ;
তবুও সেখানে হাত নাড়িয়াছ পেয়েছি তোমার আঁচ।
শেষ বাসে ওঠা, শেষ হাত নাড়া শেষ হাসি দেখা ছিল;
নির্মল ভোরে পথ বাঁক ঘুরে প্রিয়তি বিদায় নিল।


তারপরে আর ঘণ্টাখানেক তুমি বেঁচে ছিলে প্রিয়ে-
এই বুঝি ছিল শেষের যাত্রা আমার মায়া কাটিয়ে।
সেই চলে গেছ একা নীরালায় তোমার কাজের দেশে-
নতুন স্বপ্নে গেঁথে রেখে মালা চলে গেছ তুমি ভেসে ।
শেষ বিদায়ের শীতের সকাল কুয়াশাশূন্য ভোর;
কে জানিত আজ কী ঘটিবে প্রিয়! কেঁদে যাবে এই দোর।
সেদিন সকাল আমার আঁধার আমার জীবনে শোক;
তোমাকে হারিয়ে সুর তুলি বুকে দেখেছে অন্যলোক।  


সকালেতে আর উঠি না দুজন, কত আসে সোমবার;
একসাথে বসি মুখে মুখ রেখে কথা কিছু বলিবার।
কত দিন আসে! কত দিন গেল! প্রতিমাসে সেই দিন-
ফিরে ফিরে আসে ব্যথাগুলি প্রিয় আমি গুণি ছয়, তিন...
সেই চোখাচোখি শেষবার হবে কে ভেবেছে  প্রিয়তমা!
তোমার বিদায়ে ফিরে আসি ঘরে কত কাজ ঘরে জমা।
কত কথা শুধু ঘুরেফিরে আসে এমন মধুর কালে-
চিঠিতেই লিখি সকল সে কথা কান্নায় আবডালে।
             ------------


** চলবে।