সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ৩৪ (১৫/১১/২০১৮) অংশের পর-


            ।।৩৫।। কপালের আঘাত
ভেবেছি প্রথমে ঘুমিয়েই ছিলে কষ্ট পেয়েছ কম;
ঘুমের মাঝেতে শেষ হল সব, সে চিন্তা অনুপম।
পরে শুনিয়াছি জেগে ছিলে তুমি কথা বলিয়াছ সাথে-
সেই কথাখানি পরিচিত লোকে বলিয়াছে সাক্ষাতে।
বহু পথ তুমি জেগে ছিলে সাথি জেগেই দেখেছ সব-
নির্মল প্রাতে সেই সকালেতে নিত্য সে কলরব।
দূর থেকে দেখে শিশুবেলা বাড়ি দেখাও অন্যলোকে;
বাস চলিয়াছে অতি সেই দ্রুত তুমি ছিলে মহাশোকে!


তোমার কপালে ভীষণ আঘাত, আঘাত যে ভয়ানক;
ধাক্কা খেয়েছ ওই কপালেতে কী ব্যথা কী সেই শোক!
ললাটে আঘাত তীব্র যে ছিল, তীব্র সে প্রতিক্রিয়া;
অসীম কষ্টে চলে গেছ তুমি কত যন্ত্রণা সহিয়া।
আবার ভেবেছি অজ্ঞান হয়ে জলে পড়ে গেছ তুমি-
পলকে ভুলেছ স্বামী-সংসার তোমার জন্মভূমি।
কষ্টটা বুঝি পাও নি গো তুমি চলে গেছ মহাঘুমে-
সলিলসমাধি নিত্যশহিদ গ্রহণ করেছ চুমে।


তোমার দেহের ডানহাত ছিল অসাড় শক্ত হয়ে-
কিছু যে একটা ধরে ছিলে তুমি অবিরাম সংশয়ে।
অর্থাৎ তুমি জেনেছিলে সব বুঝে ছিলে এই ব্যথা;
সজ্ঞান সাথে নিজের চোখেতে বুঝেছ নিয়তিটা।
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জীবনে বাঁচতে কঠোর সে পরিণাম;
এ শিরোধার্য করিয়াছ তুমি জীবনেতে বুঝিলাম।
নিয়তির সাথে কী মমতা নিয়ে কাটালে জগত মায়া-
বালিঘাট মাঝে আজও দেখে যাই তোমার নীরব ছায়া।


বাস ছুটে এসে পড়েছে জলেতে করেছ আর্তনাদ;
পৃথিবীর মাঝে বাঁচতে গো বলো কার না জেগেছে স্বাদ!
অনেকেই ছিল বাসের ভিতরে অনেকেই ভেসে আসে-
সাঁতার কাটিয়া সুযোগের মাঝে উঠে আসে নদীপাশে।
কত ভালো তারা, ও ভাগ্যবান! বেঁচেছে মৃত্যু ছুঁয়ে;
অনেকেই আজ ভালো আছে সাথি আহত আঘাত সয়ে।
পারো নাই তুমি নিজেকে বাঁচাতে কঠিন ছিল বিপত্তি
নিজের সাথেতে হেরে গেছ তুমি, কষ্ট তোমার প্রতি।
                --------
** চলবে।