সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ৩৭ (১৮/১১/২০১৮) অংশের পর-


          ।।৩৮।। প্রকৃতির সাথে তুমি
মনে পড়ে আজ সেদিন শ্রাবণে তুমি ছিলে মোর কাছে-
কত সবুজের রংমাখা কথা আমার হৃদয়ে আছে।
কতনা স্বপ্ন চোখের কোণায় যতনে ছিল যে আঁকা;
রাঙাপলাশের মালতির গৃহ তুমি ছাড়া বুঝি ফাঁকা।
বসন্তবাহার কাছেতে জানাত- বলতো খুলিতে দোর;
হাজার দিনের সেই মহিমায় জানা ছিল উত্তর।
আঁধার রাতের সেই চাঁদমালা জড়িয়ে ধরত সাথি
মনের কোণেতে বাজিত বেহাগ কতনা মধুর রাতি।


চলে গেলে তুমি আমাকেই ছেড়ে একা বেয়ে গেছি নাও;
অপেক্ষাতেই বসে থাকি শুধু তুমি কি দেখতে পাও!
একদিন ছিল সবুজ সে পাতা আমার বৃক্ষ জুড়ে-
সব পাতা তার ঝরে গেছে যেন গাছটি রয়েছে দূরে।
আমার হলুদ বাগিচার পরে খেলিত রঙিন পাখি;
তাদের স্বপ্ন আমার কথায় গোপনে রেখেছি ঢাকি।
সেদিন ভীষণ সেই দাবানলে স্তব্ধ হয়েছে সব;
ঝলসিয়া গেছে জীবন আমার মনের পাখি নীরব।


নদীর ওপার থেকে যায় দেখি নদীর অন্য পারে-
কোনোখানে আজ ঠাঁই নেই তার আমি আজ ভবঘুরে।
ওপারেতে ছিল সবুজের গ্রাম শস্য শ্যামলা মাঠ
ছোটো কূলে তার কত ভালোবাসা প্লাবিত সেই ললাট।
সব কিছু ছিল আমার ঘরেতে গোলা ভরা কত ধান;
উঠান ভরিয়া পাখিরা আসিত কত শিউলির গান।
মাটির দেওয়ালে আলপনা ছিল মনের রঙেতে আঁকা;
যত্নে ভরিত মনটি আমার নিপুণতা সাথে রাখা।


আকাশের গায়ে আষাঢ়ের মেঘ ইদের চাঁদের সনে
হেসে হেসে আজ লুকোচুরি খেলে লেগেছে মাতন মনে।
একফালি চাঁদ আনিয়াছে খুশি সবার মনের মাঝে;
আকাশের বুকে ব্যাকুল দৃষ্টি চোখের পলকে বাজে।
আজ তাই প্রিয় প্রকৃতির বুকে তোমার নামটি দেখি
আপন খেয়ালে প্রকৃতির সাথে তোমার কথায় লিখি
তুমি যে আমার আপন বেলার চেনা পথটির সুর;
তোমাকে যে তাই করেছি তুলনা তুমি আছ বহুদূর।
               ----------
** চলবে।