সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ০৩ (১৫/১০/২০১৮) অংশের পর-                    


              ।।৪।। ছেলে-মেয়ে বিছানায়
তোমার ছেলেটি, তোমার মেয়েটি তখনও গো বিছানায়;
কপালে কী আছে! কী শুনিবে জেগে! অদেখা অপেক্ষায়।
কত ছোটো তারা কিছুই বোঝে না শিশু বালিকার মন;
বিছানার মাঝে ঘুমাইছে যেন শান্ত ফুলের বন।
রাত্তিরে তারা গল্প করেছে শুয়েছে মায়ের কাছে;
দিনশেষে বুঝি কত কথকতা তাদের বলার আছে।
বলিতে বলিতে আবদার শেষে ঘুমিয়ে পড়েছে মন
এত ক্ষণে তারা জেগে গেছে বুঝি হয়েছে কিছুক্ষণ।


ছেলের বায়না, মেয়ের সে খুশি সেইতো রাতের বেলা;
সারাদিন তুমি বাইরেই থাকো ওদের সঙ্গী খেলা।
তাদের নিয়েই সময় দিয়েছ তুমি যে বন্ধু মতো-
কখনো বা তুমি খেলনা হয়েছ কখনো সহজে রত।
প্রতিদিন তারা ঘুম ভেঙে ওঠে দেখেছে সোনার রোদ;
আজ যেন বুঝি কে নিয়েছে মন, সাথে প্রতিশোধ!
বাড়ি মাঝে আছে এক সে আন্টি তাদের দেখার তরে-
বারেবারে তবু মায়ের কথায় নীরবেতে মনে পড়ে।


স্বপ্নের ঘোরে কেঁদে ওঠে যেন কোন সে অলক্ষণ;
পোড়া মনে আজ বাড়ে সন্দেহ কোথা বুঝি অঘটন!
ভোরের স্বপ্ন কখনও কি গো মিথ্যা হইতে পারে?
অজান্তেই যে মেয়েটি আমার ফুঁপিয়ে কান্না করে।
সকালের পথে চলেছিল বাস হয়ত অনেক দ্রুত!
ভোরের সময় ভেদ করে বাস আজ ছোটে অবিরত।
কিছু পথ পরে এ 'বালিরঘাট' নীচেতে ভয়াল নদী;
চালকের ভুলে বাস পড়ে গেল অনেক প্রাণ সমাধি।


কাহারে বা বলি, কাহারে শুধায়- কেমনে নীরবে কাঁদি!
দিনের শুরুতে জনমের মতো তোমার সলিলসমাধি।
এই ছিল বুঝি  শেষের যাত্রা স্বামী-সন্তান ছেড়ে;
বিনামেঘে আজ এ বজ্রপাত ব্যথা এল অন্তরে।
চলে গেলে তুমি মায়া মমতায় সুন্দর পৃথিবীর;
সন্তানদের রেখে গেলে শুধু করে মন অনাথির।
দিন চলে যায়, সময়ের স্রোত থাকে শুধু কথকতা;
কিছু জানি নাই কিছু বুঝি নাই চরম বাস্তবতা।
             --------
** চলবে।