সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ৪৫ (২৬/১১/২০১৮) অংশের পর-


             ।।৪৬।। আমার বারোটি মাস
দেখতে দেখতে কেটে গেল প্রিয় আমার বারোটি মাস-
একটি বছর তোমার ছাড়া যে আমার গোপনবাস।
দিন চলে গেছে দিনের নিয়মে, রাতগুলি গেছে চলে-
কত কথা যেন আমার মনেতে তারা গেছে না- বলে।
সেদিন ছিল গো শীতের সকাল আজকে এসেছে ফিরে
সারা বছরের গোপনপ্রণয় আমাকে রেখেছে ঘিরে।
আমার মনেতে যন্ত্রণা কত প্রতিটি প্রহরকাল;
সব ব্যথা আমি সয়ে সয়ে আজ বেঁচে আছি বেসামাল।


চলে গেছে বেলা দাবদাহ সাথে প্রবল বোশেখ দিন;
ছায়াহীন পথে ছায়াহীন বাড়ি, আমি বুঝি ছায়াহীন।
প্রখর তাপের প্রখর সময়ে কেটেছে আমার বেলা;
কালবৈশাখী দিনশেষে আসে তাহার সাথেই খেলা।
এই পথ ধরে এসেছে বাদল নবীন আষাঢ় মাস;
কালোমেঘ পানে চেয়ে থাকা শুধু মনে নেই উদ্ভাস!
শ্রাবণের ধারা বহিছে বাহিরে মন পোড়ে বেদনায়;
ঘরের কোণেতে জোছনা ডেকেছে আমি কোথা ভেসে যাই।


শীতল মনেতে আসে অবশেষে আবার ভাদরবেলা
শরত ঋতুর বন্ধনে আজ স্বপ্নের সাথে খেলা।
এমন দিনের প্রতিটি প্রভাতে তুমি সেজে নিতে সখী
আজকে শরত একেলায় আসে আমি যেন চিরদুখী।
এই পথে আসে হেমন্তকাল নবীন মনের সারি-
যেদিকে তাকাই নব মন মাঝে প্রকৃতি সে বাহারি।
হেমন্ত মাঠে সূর্য ডুবিছে ঈষৎ শীতলবোধ;
কে যেন গো এসে মনের মাঝেতে নিয়ে যায় প্রতিশোধ।


তারপরে আসে পৌষের দিন প্রবল কাঁপানো শীত
সেই হারানোর বেদনা আমার দোলা দিয়ে যায় গীত।
শীত বুঝি আজ লাগে না গো গায়ে ভীষণ মনেতে বেঁধে-
চলে যাক শীত দেখিব না জেগে আমি আর সেধে সেধে।
তুমি গেছ প্রিয় একটি বছর আবার আসে বসন্ত!
আমার পথেই আমি আছি আজ হৃদয় যে অশান্ত।
লোকেরা দেখিছে বসন্ত শোভা আমি দেখি সব ফিকে-
পলাশ শিমুলে চোখ নেই আজ চোখ নেই কোনোদিকে।
                -----------
** চলবে। আর দুটি পর্ব।