সুফিয়া মমতাজ (কাব্যগ্রন্থ) : ০৬ (১৮/১০/২০১৮) অংশের পর-


                ।।৭।। তোমার মানিজা
তোমার মানিজা গিন্নি বালিকা চিন্তা কোরো না প্রিয়া;
নিজের মনকে শক্ত করেছে অন্যকে বুঝাইয়া।
নিজের থেকেই আজকে সে বুঝি বাবাকে নিয়েই ভাবে;
কখন বুঝি গো বাবার চোখেই অশ্রু আসে নীরবে!
সাতটি বছর বয়স তাহার নবীন বালিকা মন;
বুক পুড়ে যায়, মন পুড়ে আসে এই অকালদহন।
বাবার চোখেতে হাত দিয়ে দেখে, দেখে চেয়ে বারেবারে;
বাবা বুঝি তার কেঁদে ওঠে ওই আড়ালে অন্ধকারে।


নিজের মনকে করেছে শক্ত বাবা ও ভাইয়ের কাছে-
তোমার জন্য জমানো কষ্ট ওর মনে তোলা আছে।
ওই তো তোমার বড়ো আদরের প্রথম সে সন্তান
অন্যের থেকে ঢের বেশি ব্যথা দিয়েছে তার প্রমাণ।
ভাইকে নিয়েই ব্যস্ত থাকে যে ভাইয়ের দুঃখ দূর!
আপনার ক্ষত কণ্ঠে শুকিয়ে তবু ও তুলেছে সুর।
স্কুলেতে সেদিন কেঁদেছে ভীষণ দিদিমণিদের কাছে-
অবুঝ বালিকা সেই আঁখিজল মুছতে পারেনি পাছে।


মেয়ে যে তোমার সোনার বালিকা ওর ব্যথা কম নয়;
সকলের কাছে ছুটে ছুটে গেছে কী জানি কি আজ হয়?
আমি তো ছুটেছি ঘটনার পর শেষ আশা সাথে নিয়ে;
ফিরে আসি সেই রাত বারোটায় বাড়ি রেখে ছেলে মেয়ে।
আমার সময় কেটে গেছে জানি সমব্যথা কথা টানে;
কী ঝড় বয়েছে শিশুমন 'পরে ভেবেছি রোদন বানে!
বাড়িতে বয়েছে কান্নার রোল আত্মীয় প্রতিবেশী;
শিশুদের চোখে আঁখি জল ছিল দূর হয়ে গেছে হাসি।


সবাই এসেছে উঠানে কেঁদেছে ঘাবড়ে গিয়েছে মন;
শিশুদের পানে সে সহানুভূতি দেখিয়েছে প্রিয়জন।
মায়ের জন্য দুঃখ এসেছে দুঃখে ভেসেছে স্নেহ;
বাবা আজি তার আনতে গিয়েছে মায়ের নিথর দেহ।
মা তার আসিবে, অন্য সাজেতে! বলবে না আর কথা
শিশুমন তাই ডুকরে কেঁদেছে হয়নি যে অন্যথা।
না খেয়েছে কিছু, না বলেছে কথা, নির্বাক সে বালিকা
চেয়ে চেয়ে শুধু সকলকে দেখে, ভাবে বুঝি কিছু একা!
             ----------
** চলবে।