কাহার চউক্ষের জলে আমার চলার পথ সিক্ত হয়,
কাহার হৃদয়ের গোপন কান্না আমার কানে বিষের বাঁশী হয়ে রয়,
কাহার একটি উপবাসে আমার হাজারো কল্যাণ সাধিত হয়,
কে সে? সে কি শুধুই আমার কবিতা?


কাহার নূপুরের ধ্বনি আমার বুকের গভীরে তোলে কম্পন,
কাহার অলোকের ঘ্রাণে মাতোয়ারা হয় আমার মন,
কাহার ওষ্ঠের হাসি আমার চোখে মুক্তো হয়ে ফেলে প্রতিফলন,
কে সে? সে কি শুধুই আমার কবিতা?


কাহার হাতের কঙ্কণ-বালা আমার হিয়ায় বীণার সুর তোলে,
কাহার খোঁপার বেলী আমার উঠানে এলে পাপড়ি মেলে,
কাহার কপালের লাল টিপ আমার ঘরে এসে চাঁদ হয়ে জ্বলে।
কে সে? সে কি শুধুই আমার কবিতা?


কাহার মুখ দর্শনে আমার একটি করে পাপ মোচন হয়,
কাহার শাড়ির জমিন আমার মাথায় ছাতা হয় চৈত্রের খরায়,
কাহার অবর্তমানে আমি মরি জন্ম জন্মান্তরের পিপাসায়,
কে সে? সে কি শুধুই আমার কবিতা?


কাহার চোখের কাজল আমার তুলিতে এলেই নিখুঁত হয় কারুকার্য,
কাহার নাকফুল খসে গেলে আমার অমঙ্গল হয় শিরোধার্য,
কাহার শিথির সিঁদুর মুছে গেলে আমার মরণ হয় অনিবার্য,
কে সে? সে কি শুধুই আমার কবিতা?


তাহার অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে আমার চেয়ে থাকা,
কবিতা থেকে সে, আর যদি নাহি আসে
যদি না হয় পাওয়া,
মরণের পর কিছু থাকে না, তাই তো আমার থেমে যাওয়া?