নতুন সমাজের অতিথি
    ✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


আমরা চেতনাশূন্য অনুভূতিহীন কোন মৃতদেহ নই,
ক্ষুধার্ত-পীড়িত এক অসহায় জীবন যোদ্ধা !
তোমরা এক টুকরো খাদ্য দেবে? দিনের শেষে মুক্ত
আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে,পরাজিত জীবনের
কান্নার ধ্বনি প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে,
কিন্তু কেউ এক টুকরা খাদ্য ছুড়ে দেয় না এই পথের মাঝে।


সাদা-কালো রুক্ষ লম্বা চুলে, মলিন মুখ ঢেকে আছে।
প্রকাশ হয় না আর অন্তরের যন্ত্রণা মিশ্রিত বেদনাদায়ক শব্দে
রচিত করুণ উপন্যাস।
দুর্গন্ধ যুক্ত ছেড়া পোশাক পরে দিনভর ছুটে চলে যারা ওই
অচেনা পথে একটু খাদ্যের আশায়,
তারা সংগ্রামী! তবু আমি চাইছি খাদ্যের ভিক্ষা।


কেননা আজ সন্ধান পাইনি পথে পড়ে থাকা পড়া রুটি,
ছোড়ানো মুড়ি,তোমাদের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট!
এবং ছুটে চলা কুকুরের মুখ থেকে, পড়ে যাওয়া পচা-বাসি
খাবারের টুকরা।
এখন কাক-চিল-শিয়ালের হয়েছি বন্ধু,
‘হয়েছি নতুন সমাজের অতিথি’।


ব্যর্থ দিনের ক্লান্তি সন্ধ্যার আগমনে যখন অন্তরে করে প্রবেশ,
দৃষ্টিতে নেমে আসে অন্ধকার!
থেমে যায় চলন শক্তি, খুঁজি আশ্রয়।
গাছের নিচে নিদ্রিত দেহে কাম্‌ড়ায় মশা-মাছি
অগণিত পোকামাকড়,
নীরবে নির্জনে সয়ে যাই অন্তরের বিষ জ্বালা,
সজাগ হলে শুরু হয় আবার পথ চলা।


জানি, তোমরা নিষ্ঠুর’ তোমরা দেবে না খাদ্য।
রোগা-ক্ষীণ শরীর দেখে তোমারই ঠাট্টা করো,
তোমারই করো আমাদের ঘৃণা।
অনেকে আমাদের ভয় পায়, আমরা মরিনি
তবু ওরা মৃত কঙ্কাল  এবং পাগল মনে করে,
কিন্তু কেউ জানতেই চায় না, আমরা এমন কেন হলাম।
তাই যারা হয়েছে শোষিত-পীড়িত-অবাঞ্ছিত এই সমাজে
আজ থেকে সকলে লড়বে,
আগামী নতুন রঙিন দিনের আশা ও প্রত্যাশায়।



রচনাকাল, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দ
বাংলা- ১৪ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, বুধবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।