আত্মবিসর্জন অঞ্জলি
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা নিয়ে অনেকটা পথ হেটে এসেছি
নিঃসঙ্গ মনে ক্ষত পদচারণে।
দীর্ঘ-দিবস কাটিয়েছি জেগে, এখন নির্জন সমাধি
অন্তস্তলে ঘুমিয়ে পড়ার স্বপ্নে বিভোর হতে চাই।


অপেক্ষা এবং প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে সূর্য হক অস্তমিত,
নেমে আসুক আমার পৃথিবী জুড়ে অন্ধকার।
ক্লান্ত-শ্রান্ত চোখের দৃষ্টি থমকে দাঁড়াক, আকাশ ছোঁয়া
পর্বতের সম্মুখে।


যে বাসনা শৃঙ্গীর শিখরে পৌঁছানোর আশা জাগিয়ে ছিল
অন্তরে, এবং এনে দিয়েছিল গভীর সুমুদ্দুরের গহ্বরে
জন্ম নেওয়া মুক্তার খোঁজ, আজ সব ব্যর্থ হয়ে
গঙ্গার ধারায় মিশেছে।


এখন রিক্ত অন্তরে আমার প্রেম নেই, নেই কোন স্বপ্ন,
নেই বেঁচে থাকার আশা।
বিরহ নামক তির বিদ্ধ জ্বরা-জীর্ণ জীবন,
মুক্তির পিপাসায় ছটফট করছে।
আর আমি বীর নই, নই প্রেমিক, নই কারো পূজারী।


পরাজিত জীবনের ব্যথা-ব্যর্থতা, পাওয়া না পাওয়ার বাসনা,
প্রতিক্ষণে নরক যন্ত্রণা দেয় জীবন কে।
অতীত ভুলতে সকলে চায়, তবু স্মৃতি ভোলা হয়ে ওঠে না।
প্রভাতে ফুল ফোটে, দিনভর সুগন্ধ বিলিয়ে ঝরে যায়,
কিন্তু কে ভুলেছে তাকে?


ওগো আমিও ভুলিনি তোমায়, রেখেছি অশ্রান্ত মনে-
প্রতিক্ষণে করি স্মরণ।
মধুর ভাবনা-কল্পনা এবং বেদনার অশ্রু গাঁথায় তুমি অমর।
দূরে, তবু অন্তরের সীমানায় তোমাকে করি অনুভব।


আজ আধো-আলোয় চেনা হয় না পথ,
অচেনা অরণ্যে হারিয়ে যেতে চায় মন।
চাই নিস্তব্ধতা, চাই বিশ্রাম, চাই অবসান।


হে-অনন্ত অমরত্ব নিষ্প্রাণ মূর্তি, তুমি আর কত নিঃসঙ্গ
অন্তরের ক্রন্দন ধ্বনি শুনতে চাও?
আমি তো অনন্তকাল প্রেমের প্রত্যাশায় তোমার পূজায় মত্ত,
কিন্তু এবার সন্ধ্যায় দিতে চাই সজ্জিত চরণে
আত্ম বিসর্জন অঞ্জলি।



✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল, ২৮ অক্টোবর ২০২০ সাল,
বাংলা- ১১ কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, বুধবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।