বিচ্ছেদ
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


শীতের সারা রাত জেগে কুয়াশায় ভিজে, দিনের আলোয় রং
হারিয়ে, জীর্ণ-শীর্ণ-শুকনো ঝরা পাতা আমি!
আমাকে কেউ আর দেখতেই চায় না চোখ মেলে।
সারাটি জনম ধরে যাকে পরিপূর্ণ সুখ এনে দিয়েছি
তিলেতিলে ক্ষয়ে, সেই আমাকে ত্যাগ করলো বেলাশেষের
সুরে কাল সন্ধ্যায়।  


প্রিয়জন নয়, প্রয়োজনে যারা আসে-স্বার্থ ফুরিয়ে যেতেই
তারা চলে যায়। হতে হয়-আরো একবার নীরব-নির্জনে-
স্বজন-শূন্য একা।
কেউ স্মৃতি ধরে আঁকড়ে বেঁচে থাকে আশায়-আশায়,
কেউ পড়ে থাকে আমার মত পথের ধূলায়।
কেউ রাত জেগে আপন মনে স্বপ্ন বোনে, আর কল্পনায় করে
কবিতার খোঁজ।
বুকের রক্ত-অশ্রু জল এক করে ঝরিয়ে রাঙাতে থাকে
কারো চরণ চিহ্ন।
অবশেষে কাগজের নৌকার মত, বাদল ধারায় ভাসতে-
ভাসতে ডুবে যেতে হয় নদীর নিতলে।


কিন্তু, এখনো আমার হৃদয় তোমার ছবি আঁকে।
রংধনু থেকে রং এনে রাঙিয়ে ছিলেম যে চরণ খানি,
তার স্মরণে মন এত যে ব্যাকুল-
নিজেই নিজেকে ভেবে বড়ো বিস্ময় হই।
বন ফুল তুলে,প্রদীপ-ধূপ জ্বেলে, যে মন্দিরে প্রবেশ করে
পূজা করেছিলেম একদিন, সে মন্দিরের দ্বার আজ রুদ্ধ।
আমার মত হতভাগ্য পূজারীর প্রবেশ সেখানে নিষেধ।
তাই বিরহ-বুকে কারো চরণ তলে আজ রেখেছি মাথা,
মুক্তি-শুধু মুক্তির কামনায়।


রচনাকাল ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ সাল
বাংলা ২১ অগ্রহায়ণ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ (রবিবার)  
দাকোপ খুলনা বাংলাদেশ।