বলাৎকার
✍- উজ্জ্বল সরদার আর্য


ক্ষমতাশালী যারা সভ্যতা গড়ে নাকি তারা,
তবে শোষণকারী হয়ে করা-করে আধিপত্য বিস্তার?
রাতের অন্ধকারে ধরে এনেছে আমারে,
‘আমি নিরীহ-নারী’ তবু বলে সেবা কর।
পায়ে পড়েছি প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছি,
চিৎকার করে বলেছি ছেড়ে দাও!
তবু ওই হায়নার দল
ক্ষুধিত-ক্রোধিত যৌবনে মাতাল,
‘শুধু রক্ত মাংসের লালসা’ হে বীর আমায় বাঁচাও।


মদিরায় মুখ লাগিয়ে হিংস্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে,
জ্ঞানহীন পাষণ্ডরা হয় যে নেশায়তর!
ওরে কেন নারীকে বেশ্যা করো?
বাহু দিয়ে জোরে-জড়িয়ে
অধরে-অধর লাগিয়ে
দিচ্ছে চুমু-চুম্বন!
রতিতে মিথুনরত দেহ অন্তর হলো ক্ষত
বলাৎকারে কেড়ে নিও না জীবন ও যৌবন।


প্রয়োগ কালে পোষণ খুলে করেছে উলঙ্গ
গহীন-গহনে হচ্ছি একা দহন দগ্ধ
ওরা করছে রঙ্গ
নারী হয়ে জন্ম নেওয়া কি অভিশাপ?
পুরুষ শাসিত সমাজে বিদায় বাঁশি বাজে,
আর কত ফুল ঝরবে অকালে?
তবু তোমারা নিষ্পাপ।
যত কলঙ্কের কালিমা মেখেছি আমি প্রতিমা,
শুধু রয়ে গেলে শ্রেষ্ঠ-তোমরাই মহান!
আছে ক্ষমতার শক্তি হচ্ছে মনুষ্যত্বের অবনতি
ধন সম্পত্তিতে ওরা বলবান।


তাই শত সতী-সাবিত্রী যদি হয় লুণ্ঠন
হয় ধর্ষণ, করে যারা রক্ত পান-
তবু তাদের হয় না বিচার!
ওরা বলে কিসের অপরাধ, কিসের দণ্ড?
নারী দাসী, করো পদতলে পণ্ড-
যত খুশি করবো ব্যবহার।
আজ কে দাঁড়াবে শৃঙ্গী হয়ে,
শাসিত সমাজের সম্মুখে এগিয়ে?
লঙ্কাপতি হর্ষে উন্মাদ করছে অট্টহাসি!  
তাই আপন বেদনায় মুখ ঢেকেছে তমিস্রায়,
লজ্জাবতীরা রমণীয়তা-কমনীয়তা হারায়-
পরেছে নিজ গলে ফাঁসি।


ওরে তোরা আর কত নারীকে করবি অসতী?
দাসী হয়ে অশ্রু ঝরিয়ে, কত করবো আরতি?
পীড়িত প্রাণ আমার!
কত রাত দিন নীরবে চলে যায়
ভুবন রাঙাই অশ্রু ধারায়,
বন্দী আমি তবে এবার খুলবো দ্বার।
দিশেহারা দেহ মনে দ্রোহ,
দিনে-দিনে হচ্ছি পীড়িত ক্ষরিত!
তাই মরণ কালে উঠেছি জ্বলে,
করছি কলহ-বিদ্রোহ রুদ্রাণী রূপে অবিরত ।



রচনাকাল, ১ জুন ২০২০ খ্রিস্টাব্দ,
বাংলা-১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।