আমি প্রেমে পড়েছি, প্রেমে পড়েছি বার-বার!
আমি তার'ই প্রেমে পড়েছি, যে শুধু'ই আমার’
            ওগো তুমি আমার।
   আর তাই’ আমার উঁচু মস্তক তোমার
               সম্মুখে’সমর্পণে,
             নত হয়ে যায় আজও।
এবং তোমার নাম মুখে নিতে'ই আমার হৃদয় কেঁপে ওঠে,
          স্পর্শ খোঁজে মন এবং শরীর।
   প্রতি মর্নিং ওয়াক, এবং গোধূলি বেলায়
      পাতা ঝরা পথে পায়ে পা মিলিয়ে,
                   হাত ধরে,
         পথ চলতে- চলতে কিছু গল্প,
আর চোখে-চোখ রেখে হারিয়ে যাওয়া প্রেম ছিল আমাদের।
আজও আমার মনে জাগে’ সেই অতীত বসন্তের কত কথা।
ওগো, তোমার কি মনে আছে, প্রথম কবে
   কোথায় আমাদের আলাপ হয়েছিল?
      এতক্ষণ পাশে বসে "মধুরিমা"
    শান্ত চিত্তে আমার দিকে তাকিয়ে
           কথা গুলি শুনছিল,
আর এবার পলকের আড়ালে নয়ন ঠেকে
    নত মাথা নাড়াতে'ই আমি বললুম..
       জানি, তুমি সব ভুলে গেছো।
   যদি কোন ফুলের একটুও গন্ধের স্মৃতি
           জেগে না থাকে মনে,
তবে সে ফুল’ ফোটার গর্ভ অনুভব করবে বা কোথায় ?
             ঝরে তো সে যায়,
কিন্তু আজীবন ব্যর্থ এবং পরাজিত হওয়ার
   গ্লানি বুকে ধারণ করতে হয় তাকে।


       তখন তো আমার নবীন বয়স,
    সৌন্দর্যের জ্যোতি সারা শরীর জুড়ে
       এবং চল চঞ্চলা মধুকর মন।
নদী, বন, পাহাড়ের দেশে ঘুরতে ভালো বাসতাম,
         এবং আজও ভালোবাসি।
আর ছিল একটু একটু করে সাহিত্য প্রেমিক
        হয়ে ওঠার দুরন্ত উদ্দীপনা।
মধুরিমা আমি কখনো ভাবিনি, আমার জীবনে
     তোমার মত সুন্দর কেউ আসবে।
আর আমার স্বপ্ন ছিল, সারা জীবন তোমাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচবো।
কিন্তু আজ আমি আমার মত, তুমি তোমার মত,
  এবং এমন কি দুজন দুজনের গন্ধ টুক
        পর্যন্ত নেওয়া ছেড়ে দিয়েছি । 
সারাদিন অভ্যাসে'র মাঝে নিজেকে জড়িয়ে,
   তুমি কেবল সংসার কেই ভালবেসেছ,
আর ভুলে গেছো ফেলে আশা আমাদের
             প্রথম বসন্ত কে।
আজ যখন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বড়ো আশা নিয়ে
         বেলা শেষে ঘরে ফিরি,
তুমি চিৎকার করে কেবল আমায় দায়িত্বের
         জ্ঞান দিতে থাকো,
এবং অবশেষে ডিনার করে দুজন দু'দিক ফিরে ঘুমিয়ে পড়ি।
তুমি বলতে পারো, তোমায় কতটুক পেলাম আমি এই জীবনে?
          আমার তো ইচ্ছা করে,
   তোমায় আগের মত ছুঁয়ে দেখতে,
পূর্ণিমা রাতে বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে দুজন
      দুজনকে জড়িয়ে চাঁদ দেখতে,
           এবং গল্প করতে।
এমনকি সেই বসন্ত বনে পাশা পাশি বসে
         দুজনের গন্ধ নিতে,
এবং পায়ে পা মিলিয়ে হাত ধরে পথ চলতে।


মধুরিমা আজ নিজেকে বড়ো একা মনে হয়,     কেননা আমাকে বোঝার চেষ্টা কর'নি কোনদিন।
যদিও আমার জীবনের মূল লেখক তুমি,
তোমায় ভুলে থাকাটা আমার কাছে মৃত্যু যন্ত্রণার সমান।
                তুমি'তো জানো,
অনেক বার ছেড়ে থাকার প্রয়াস ও করেছি,
         কিন্তু পারিনি ছেড়ে থাকতে।
কেননা তোমার মত কেউ মায়া জোড়ানো ডাকে ঘুম ভাঙিয়ে,
সকালে গরম কফির কাফটা ধরিয়ে দেয় না হাতে। 
রাতের অন্ধকারে সিগারেটের ধোয়া ভাসিয়ে আয়নায় সারারাত তাতে মুখ দেখলেও
কেউ বলে না,
অনেক রাত হয়েছে এবার অন্তত ঘুমাও।
শার্ট বা প্যান্ট গুলিতে ভাজ পড়লে ও কেউ ইস্ত্রি করে রেখে দেয়'না সাজিয়ে।
ওগো,  ঝগড়া করে বেঁচে থাকার জন্য ও একটা কাছের মানুষ দরকার হয়,
আর তুমি ছাড়া এ'জীবনে আমার কেউ নেই।
আমি জানি, তুমি আমায় ছাড়া থাকতে পারবে।
কিন্তু বিশ্বাস করো, আমি তোমায় ছাড়া একদম চলতে পারি'না।
তাই আজ মনে যা কিছু জাগবে,
যা কিছু করবো,
তোমাকে সাথে নিয়ে চলতে চাই।
শক্ত করে ধরতে চাই তোমার হাত টা,
তুমি আগের মত হাত টা বাড়িয়ে দাও না আরো একবার।
আসুক না এবার দ্বিতীয় কোন বসন্ত,
ফুলে ফুলে ভরে থাক দুজনের দুটি মন।
এবং বোজায় থাক লেখক ও প্রকাশকের সুন্দর সম্পর্ক টা।


উজ্জ্বল সরদার (আর্য)
রচনাকাল ৫ ওই নবেম্বর ২০১৮ সাল
রাত ৩ টায়।
নিজ বাসভবনে।