জীবনের পূর্ণতা
    ✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


যৌবনও দারিদ্র্য দুঃখে, দুয়ারে প্রভাতী পুষ্প পায়চারী করছে
সমীরে দুলে-দুলে।
প্রাতঃকাল পেরিয়ে পৌনে দুপুরে কাছে যাবো ভাবতেই,
একটা প্রজাপতি কোথা থেকে যেন সহসা উড়ে এসে
ঝরিয়ে দিলো  তার পাখা হতে স্বল্প কিছু রঙিন পরাগ।
আর তখনি বিশ্ব হাসিয়ে সুগন্ধ দিয়ে ভরিয়ে দিলো মন,
তৃপ্ত কণ্ঠে বলতে লাগলো ধন্য ওগো ধন্য আমার এই জীবন।  


প্রকৃতির এই অপূর্ব মিলন দর্শন করে, মোহিত মনে কিশোর
পেরিয়ে জাগলো যৌবন।
সময়ের সাথে-সাথে এর তীব্র দারিদ্র্যতার প্রভাব পড়তে
থাকে সকল দেহে এবং প্রাণে।
তাই শৈশবের সন্ন্যাসতা সরিয়ে তোমায় ভুলিয়ে,
পেতে চেয়েছি অধরা অমৃত।
শরৎ-সন্ধ্যায় আকাশ থেকে ঝরে পড়া যে রংয়ের রাজপথ
নির্মিত হয়েছে তোমার দেশ থেকে আমার দেশে,
সে পথে হেটে চলেছি প্রদীপ নিভিয়ে তোমার সুগন্ধ ধরে।


আজ আমি কোন পূজারী নই, পূজারিণীর দেবতা।
যৌবনের অপূর্ণতা যাকে তিলেতিলে মারছে,
পূজারীর পূর্ণতা দিয়ে তাকে তৃপ্ত করা কি রূপে সম্ভব?
তাই শোনো লক্ষ্মীটি, কুঞ্জ বনের দ্বার খুলে বধূ বেশে
হাত বাড়িয়ে দাও আজ আমার হাতে।
কয়েকটি চুম্বনে সাক্ষর করে রেখে যাই তোমার সজ্জিত অবয়বে।


মোমবাতির আলোয় দর্পণের সম্মুখে পার্বতী সজ্জিত নিজ
রূপের প্রতিরূপ দেখে আমোদিত, লজ্জিত, স্মিত মুখে তুমি
বলে উঠলে - মাত্র কয়েকটি?
যে অনন্ত যৌবনা পূজারিণী তোমায় চেয়ে তোমার মুখে তথাস্তু
বাক্য পাঠ করিয়েছে, সে শুধু প্রাপ্ত করবে কয়েকটি চুম্বন?
ভিক্ষা যদি আমায় দিতেই চাও, তবে অতৃপ্তার বাঁধনে আমায়
বেঁধে রেখো না-
আমি দেবতা কে পূর্ণ রূপে চেয়েছি।


গম্ভীর নিস্তব্ধ চিত্তে দাঁড়িয়ে ভাবছি, এ-কেই বলে বুঝি যৌবন?
যে কণ্ঠের সুর কেউ কখনো শোনেনি, এর প্রবেশে সে কণ্ঠ
সুরের রাজত্ব গড়বে!
আর সে রাজত্বে কর্ম-কর্তব্যের মত দীপ্ততার ঘটবে প্রকাশ।
তাই সৃষ্টি সুখের বাসনায়, সংসার মায়ায়, কনিষ্ঠ বন্ধনে
তোমার নূপুর গুঞ্জনে রাঙানো পায়ে পা মিলিয়ে হারিয়েছি
মিলন-মেলায়।
মোমবাতি নিভিয়ে তোমার গন্ধ নিয়ে খুঁজছি ‘জীবনের পূর্ণতা’।



✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল ইং-১০ অক্টোবর ২০১৯ সাল
বাংলা- ২৫ আশ্বিন ১৪২৬ বঙ্গাব্দ.. (বৃহস্পতিবার) 
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।