প্রেমের পূজায় খুঁজি প্রেমের পূর্ণতা
       ✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


পীড়িত অতৃপ্ত-অন্তরে ছেলেবেলা পেরিয়ে যৌবন-
জাগরণে গহীন-গহন কুঞ্জ ছেড়ে যখনি নিশুতি-নিশির
বুকে পদরেখে আঁখি মেলেছি উন্মুক্ত অন্তরীক্ষে,
দেখেছি তেজস্বী রূপ-লাবণ্যময়ী আমার ঐশ্বর্যবতী
অনন্ত যৌবনা স্বর্গের উর্বশীকে।
নির্জনে-নীরব মনের একাকীত্ব সরিয়ে, সে আসে
কাশ বনের বুক চিরে শরৎ শিশির বিন্দুতে পদরেখে
দেবী সজ্জায়।
তার রক্তে-রঞ্জিত চরণে নূপুর ধ্বনি, চঞ্চলা হরিণী চোখে
কাজলের প্রকাশিত রেখা, ললাটে লোহিত উজ্জ্বল টিপ,
সিঁথির টিকলি দখিনা হওয়ায় দুলছে আমার
অন্তরের অনন্ত প্রেমে।


সম্মুখে সারস ডানায় ভেসে চলা শ্বেত অভ্র কুঠিরে
সেই অপূর্ব নর্তকীর মনোমুগ্ধকর নৃত্য আমাকে করে শিল্পী।
পাথরে গড়া তার মূর্তির অবয়বে রং মাখানো উল্লাস,
আজ পৃথিবীকে জানিয়ে যায় সে আমার প্রেম,
সে আমার ভালোবাসা।
দিনের শেষে রৌদ্র ছায়া আঁচলে মেখে যে রঙিন গোধূলি
পথভ্রষ্ট করে প্রেমিকের,
দিগন্তে চেয়ে থাকা সে নিষ্পলক নয়নে ধরা পড়ে
শুধু তার মুখখানি।


বাস্তবে সে যে শ্বেত-শিখরে ফুটে থাকা সন্ধ্যামণি
অথবা, গভীর সাগরের অন্তস্তলে জন্ম নেওয়া রত্ন।
প্রভাতের রবি উদিত হলে সনাতনী বৈষ্ণবীর বেশে
সে আসে নির্জন পথ ধরে যৌবনের উত্তপ্ত দেহে
ঝর্ণা ধারায় সিক্ত হতে।
আজ কোন দেবরাজ নয়, মহা কবির ন্যায় ছুটে আসি
ব্রহ্মার সৃষ্টি তিলোত্তমার রূপ দর্শন হেতু।
পঙ্চানন আমি হতে পারি না সত্যি, তবে বেদব্যাস
অংশ জাত হয়ে লিখেছি প্রেমের কবিতা।


সঙ্গদানে প্রকৃতি এবং ঈশ্বরের বিভাজন
বর্জন করতে চেয়েছি, বিনিময়ে প্রতীক্ষায় রত
ধ্যানমগ্ন আছি অযুত বছর ধরে।
পূজিত প্রাণ যতবার মোহগ্রস্ত স্বপ্নে তোমার ছবি আঁকে,
অশুদ্ধতায় নেমে আসে গ্লানি।
লুণ্ঠিত হয় আমার প্রেম, দলিত হয় আত্মা।
ছুঁয়ে দেখা নয়, হৃদয় আসনে বসিয়ে
ফুল-জল-ধূপ-নৈবেদ্য আর ভক্তি মিশ্রণে
পরিপূর্ণ পূজা করে খুঁজে পেতে চাই প্রেমের পূর্ণতা।



✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল, ১৩ জুন ২০২০ সাল,
বাংলা- ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, শনিবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।