প্রাণ-প্রেয়সী
      ✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


           ভালোবেসে তোমারে রেখেছি অন্তরে
                   অঞ্জলি দানে পূজা করি,
                      তুমি স্বর্গীয়-সুন্দরী
              মানসকন্যা আমার প্রাণ-প্রেয়সী!
         তৃষিত বুকে চেয়েছি তোমাকে হে-উর্বশী!!
           ভালোবেসে তোমারে রেখেছি অন্তরে---
                  হে-আমার নিদ্রাভঙ্গ রাগিণী,
          জাগে বুকে ব্যাকুল-ব্যথা, এসো সঙ্গিনী!
          হে-অনন্ত যৌবনা করেছো অবুঝ বাহানা              
                      অধরা-মাধুরী তুমি,
        বসন্ত-বনে হারিয়েছো ফাল্গুনে খুঁজি আমি!
            ভালোবেসে তোমারে রেখেছি অন্তরে---
            পথে পথচারী পদচিহ্ন পড়বে পাঁজরে,
       ভুলেছে স্মৃতি, পুরাতন প্রীতি, আর জাগে না রে!
            হে-চঞ্চলা উতলা হরিণী তোমারে চিনি
                   আজ দেখি মধুর-মুরতি,
       রূপ-লাবণ্য অনন্য পূর্ণ-প্রভা তেজস্বী-জ্যোতি!
                  তোমার দর্শনে মোহিত মনে
                        আজ কাছে আশা,
            গ্রহণ করো অঞ্জলি, প্রেম-ভালোবাসা।
        চৈতীর-চম্পা আমার, চির সহচারী প্রিয়তমা
           স্বপ্নচারিণী হয়ে রয়ে গেলে, তুমি প্রতিমা-
               নত-নমস্কারে লুণ্ঠিত হই শুধু দ্বারে,
          ফুল কুড়িয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে করি আরতি
             দিবস ও রজনী স্মরণ করি তোমারে।
       অরুণিমা, এলে না অন্তরীক্ষ আলোকিত করে
           নিশি-নির্জনে পাই স্বপ্নে হারাই আঁধারে!
        লো-সুন্দরী, বধূ অঙ্কিত করি পিয়াসী-প্রাণে
                দেবী হয়ে থেকে গেলে মন্দিরে।
                    পূজারীর সাথী পূজারিণী
                    দুর্লভ তুমি থেকেছ দূরে,
              আকুলিত মনে গোপনে আসা যাওয়া
                    চির সঙ্গিনী নাহি কেন হলে?
                  অতৃপ্ত-ক্ষত-জাগ্রত যত কামনা
               ঝড় তোলে বুকে, করে মধুর কল্পনা-
                  লহরী ওঠে আমার অশ্রু জলে।


                সপ্তর্ষি, ভালোবাসি ওই দীপ শিখা
                           তুমি মৃগতৃষ্ণিকা -
                   নিশুতি-নিশিতে দিয়েছ দেখা
                           ছড়িয়েছ আলো!
       পুলকিত প্রাণে তোমার গানে জনম কেটে গেলো,
            প্রেমে-প্রিয়া হয়ে এসো’ খুঁজি বারে-বারে!
     সতী, জনমে-জনমে রচিত করেছো তুমি প্রেম গীতি
      করি তোমারে আরতি দেখেছি যখনি যুগযুগান্তরে।
           শোভা-শোভিত রূপবতী চেয়েছি তোমায়,
     গোধূলি পথে যত দেখি প্রেমের পিপাসা বেড়ে যায়।
          বিরহ-বেদনা রক্ত জল আঁখিতে করে টলমল,
                    অশ্রু ঝরিয়ে চরণ রঞ্জিত করি!
             ক্ষুধিত যৌবন ক্ষত রক্তাক্ত আমার হিয়া,
                    অন্তরালে করে শুধু প্রিয়া-প্রিয়া,
           অন্তর আসনে বসিয়ে তোমারে বন্দনা করি!
                   নীলিমা, সুনীল শূন্যে মিশে যায়
                         যত ধরতে কাছে যাই,
              অধরা অপ্সরা আমার দিয়েছে আঘাত
                             নিয়েছে বিদায়।
                            
            দুরতি, দীর্ঘ-দূরে নিঃসঙ্গতা ধরেছে ঘিরে
                     অনন্ত প্রেমে হক কাছে আশা!
                  স্পর্শ অনুভবের পেয়েছে পিপাসা-
                               নয়নে দুরাশা!
            দিগন্ত হতে দিগন্তরে নিয়ে যায় আমারে
                         বিপুল বাসনা ব্যগ্রহে,
                     খুঁজি তোমারে গ্রহ-উপগ্রহে!
            প্রেমে-প্লাবিত অতৃপ্ত জীবন ক্ষুধিত যৌবন
                  নিদ্রিত নয়নে করে রজনী যাপন,
                      ব্যথিত ব্যথা বুকে যাই দ্বারে
                 ভালোবাসি জনমে-জনমে তোমারে
                           অন্তরে করি আপন।
                         পূজারী হয়ে করি পূজা,
                    পুষ্প-চন্দনে দেখি সাজসজ্জা-
                              তুমি রূপবতী!
             অপরূপা, অঙ্গনা যত দেখি সব সরূপা
             সকলের মাঝে করি তোমারে অন্বেষণ!              
         প্রিয় হয়ে করি যত চুম্বন,চুম্বনে করি আপন,
              গোপনে অধর স্পর্শে কেঁপে ওঠে বক্ষ-
                      নত হই তোমারই প্রতি।


    যত আছে প্রেমিক,প্রেমিকা বিহনে করে রজনী যাপন!
       শয়নে-স্বপ্নে বক্ষে রেখে, শেষ রাত্রি করেছে চুম্বন।
    শিহরণ-শরীরে অশ্রান্ত-অন্তরে কল্পনায় ভেসে যাওয়া,
  আমিও করেছি চুম্বন, মধুর মিলনে তারে কাছে পাওয়া।
        অরণ্যে অযুত কুসুম মাঝে, আমি খুঁজি তোমারে!
   শ্রেষ্ঠ সুন্দর দেখি শুধু তার, সে আছে আমার অন্তরে।
   স্মরণ করি সকাল-সন্ধ্যা রাতে কাছে যেতে চায় প্রাণ,
  কামনা জাগে দেহ মনে মিশে করতে চাই প্রেমের গান।
     কাম স্রষ্টার-সৃষ্টির সাথে মিশে আছে যতদিন থেকে,
        আমিও চেয়েছি ভালোবেসে ততদিন তোমাকে।
       তিলোত্তমা, তিলে-তিলে গড়েছে তোমারে ব্রহ্মা
             যৌবনা তুমি রতি আমি কাম বিশ্ব পতি,
               রূপে মনোহর নটবর চেয়েছে প্রীতি-  
                     আমি খু্জি আপন সত্তা।
                      
          প্রেম সুন্দর, সুন্দর তুমি, হয়েছো প্রেমিকা!
    সতী হয়ে জাগালে না আমারে, আমি ধ্যানমগ্ন একা।
         নীহারিকা, সুদূর দিগন্তে তোমাকে দেখেছি
               ডেকেছি কাছে অন্তর-অঞ্জলি দানে!
        সুদূরিকা, দূরে-দূরে থেকে গেলে আমারে ভুলে
                     বিরহের অশ্রু ঝরছে নয়নে।
            প্রকৃতি-পতি খোঁজে এসেছে  যুগে-যুগে,
         বিশ্ব মাঝে বধূ সাজে করেছে প্রেমিক আপন!
        ভিন্ন রূপ, ভিন্ন ঠোঁটে, করেছি আমি যত চুম্বন -
                  তবু তোমা হারা বেদনা জাগে।
    আজ যা কিছু দেখি সব-সুন্দর, সুন্দরে বাঁচি বারবার!
        প্রেম পবিত্র’ সত্য’ তুমি আছো অন্তরে আমার।
        ওগো-অবশেষে আজ জেনেছি বৃথা আমি খুঁজি,
                       তোমারে পেয়েছি আজ-
                গোপন হিয়ার আকুতি প্রেমের তরে!
                   অভিন্ন প্রেম, প্রেমিকা-একাধিক;
          যাকেই ভালোবাসি, ভালোবাসা হয় তোমারে।



✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
রচনাকাল, ২৬ জুলাই ২০২০ সাল,
বাংলা- ১০ শ্রাবণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, বুধবার।
দাকোপ খুলনা, বাংলাদেশ।