ছেঁড়া উপন্যাস
    ✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য


সমৃদ্ধ রাজ্যের রাজকুমারী আর ঠিকানাহীন রাজপথের
রাজপান্থ,যেমন কোনদিন প্রেমের উপন্যাস হয়ে বাঁচতে চায় না। তেমনি আমার দেওয়া লাল গোলাপ তোমার পদতলে আত্মহত্যা করে যতই প্রেমিক হওয়ার ক্রেডিট খোঁজে না কেন, তোমার আঙিনায় তার সমাধিস্থ চোখের জলে কোনদিন হবে না জানি।


তবু ভালোবাসি, কিন্তু কেন?  এ-প্রশ্নের উত্তর আমার সত্যি জানা নেই।


সেদিন গোধূলির একান্ত পথে সঙ্গী খুঁজতে দশ টাকার ঝালমুড়ি কিনতে গিয়ে দেখি, জীবনের ব্যর্থতায় তরতাজা যুবক  উপন্যাসের পাতা ছিঁড়ে ঝাল মুড়ি বিক্রি করছে,
আর মশলার ঝাঁজালো ঝাঁঝে শব্দের চোখে ঝরছে  রক্ত স্রোত।
স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে সেই ছেড়া পাতা বুকে জড়িয়ে,
আমি ভুলতে চেয়েছি ওগো তোমার চোখে চোখ রেখে নব সৃষ্টি অনন্ত প্রেমের মহাকাব্য।


কিন্তু পারিনি ভুলতে ,নিদ্রাভঙ্গ রাতের গভীরে তুমি এলে বিষাদে ভরা আমার জলে ভেজা নয়নের পাতা ছু্ঁয়ে কবিতা হতে কল্পনায়।


আজ বসন্তের শেষ রাত্রি, ঝরে পড়া পাতাদের কান্নার ধ্বনি শুধু শুনি!
তারি মাঝে বেজে ওঠে চরণে তোমার নূপুরধ্বনি, ও-যে নিষিদ্ধ মরিচিকার হাতছানি, আমি বুঝেও অবুঝের মত তোমাকে করি আপন।


এখন ওষ্ঠ অধরে আগুন জ্বেলে নিকোটিনের ধোয়া খুঁজি বাতাসে,
বেসামাল বুকে সুখের নিবাস আজ শ্মশান।


বলতে পারো, তোমাকে একটু দেখার জন্য হৃদটা কেন এত ব্যাকুল হয়?
কেন তোমার নাম দিন রাত শুধু স্মরণে আসে.?
কেন মধ্য রাতে সাগরে এত ঢেউ ওঠে? কেন পাহাড় ভাঙা স্রোত হয়ে অশ্রু আসে দু চোখে?


জানি উত্তর নেই, জানি আমি প্রচ্ছদ বিহীন ছেঁড়া উপন্যাসের পাতা!
খাঁখাঁ রোদ্দুর পথে, বৃষ্টি ভেজা স্নাত রাতে, কুয়াশা মাখা শীতে পথে পথে আমার হবে অবক্ষয়।



চম্পাকলি নামটি তার ফুটেছে বৃহৎ এক বৃক্ষে,
   ভালোবেসে দেখি দূর হতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজ সচক্ষে।
তবুও পারিনা তারে কখনো ছুয়ে দেখতে,
কাটায় ঘেরা অবয়ব তার
                      অন্তরালে লুকিয়ে পড়ে নক্তে।
তার বিহনে বিভোর হয়ে সুপ্তিতে স্বপ্ন আমি দেখি,
            এ'বসন্তে হয়েছে মোর সখী,
                 হৃদয়ে রং তুলীতে
                          নতুন রূপে
              কেবল তার ছবি আঁকি।
জানি,
        মালিনী মালাবানিয়ে তারে একদিন
           পরিয়ে দেবে যুবরাজের গলে,
বসন্তে বধূ সজ্জিত চরণ রাঙাতে মোর্ লোহিত রক্ত ঢালতে হবে তার চরণ তলে।


কিন্তু, আমি যে অভাগা তারে এতো ভালোবাসি,
          এ'কথা শুনলে সকলে হর্ষে হাসবে,
                 বলবে- মূর্খ উন্মাদ চাষি।
মনের ভুলে চেয়েছিলুম, জানিনা কোন সময়?
                       পেলুমনা তারে,
        তবে কেমন করে ভুলি বলো তোমায় ?
              মোর্ কিছু নেই পড়া ললাটে
      তবুও, তারে সেবাকরে যাবোভালোবেসে !
    আমি হবো জন্মে জন্মে  তার দাশ, এই দেশে।
       কিন্তু,   করবোনা কখনো জোর করে চুমু চুম্বন,
             অবয়বকে ক্ষত-বিক্ষত এবং লুণ্ঠন!
       অহংকার বশে বলবো না আমি তব শ্রেষ্ঠ সখা,  
           এক নরপতির সমান।
..
- উজ্জ্বল সরদার
- উজ্জ্বল সরদার
...দাকোপ খুলনা