তিমির বিদারী
✍-উজ্জ্বল সরদার আর্য
পাখির কলরব গেছে থেমে, নিস্তব্ধ রজনী এলো নেমে,
চতুর্দিক আঁধারে অবরুদ্ধ আমার অবনি!
বদ্ধ ঘরে লুকিয়ে প্রোজ্জ্বল প্রদীপ নিভিয়ে,
মরণের অপেক্ষায় সময় গুনি।
এই ভাঙা নিকেতনে নিশিকান্তের কিরণে
আর ঝলমল করে না,
ক্লান্ত-চকিত-তৃষিত অন্তরে অশ্রু ঝরে
দুরাশার স্বপ্নে -তা কেউ জানেনা।
তবুও ঘুম ভেঙে যায় হৃদয়ে জাগে মৃত্যু ভয়
এই নিশুতি-নিশিতে,
কখন কে চলে যাবে বুকের পাঞ্জর ঝাঁজরা হবে
আমি চাই না রণক্ষেত্রে যেতে।
শুধু কান পেতে রাখি জানালায়
কেউ চিৎকার করে বলছে, হে বন্ধু বিদায়!
বার্তা সব ভয়ে মিশ্রিত, ভিড় করে আসে অবিরত,
আর্তনাদ ধ্বনি আমার হৃদয় কে কাঁপায়।
যখন কপাট খুলে নয়ন মেলে
তাকিয়েছি দূর-দিগন্তে,
দেখি দেশ জুড়ে দহন জ্বলতে -
পুড়ছে মানুষ কত
নিকষকৃষ্ণ ধূম কিরণকে করেছে গুম
অন্তর ক্ষত ঝরছে রক্ত হব-হত।
তাই এই দুর্লভ রাত কাটে না আমার দুচোখে,
শুধু আঁখিতে অশ্রু ঝরে আপন শোঁকে -
মনে হয় এই বুঝি শেষ রাত
শুনেছি মরেছে সব্যসাচী আজ কি করে বাঁচি,
তমসা প্রাচীন-প্রাচী প্রহর-প্রাচীরে কে দেবে আঘাত?
তাই, প্রভাত পুষ্পে পৃথিবী হবে না মুখরিত
গাইবে না গান আর বসন্তের পরভৃত,
ক্ষত প্রাণে রাখালরাজ যাবেনা মাঠে আজ
মরণ ভয়ে যুদ্ধ এড়িয়ে, লুকিয়ে থাকবো আর কত?
তাই ঘর ছেড়ে এসেছি জনতার ভিড়ে,
শুনি এখানে স্বাধীন-উত্থান-গীতি!
এক নক্তচারী যোদ্ধার বেশ ধারী
কানেকানে বলে যায় আসবে আবার প্রভাতি।
তবে কি আমি ভুল?
ওরা করছে শত্রু নির্মূল-
অস্ত্র হাতে
বীর হতে তাই এসেছি এবার
পুশুরাজের ছেড়েছি হুংকার,
বিধ্বংস করছি আমি-অভ্র গর্জিত বজ্র আঘাতে।
রচনাকাল -৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ,
২৪ ভাদ্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ (রবিবার)
দাকোপ খুলনা,বাংলাদেশ।