ঐ দূর সীমাহীন আকাশ আমায় ডাকে
সেখানে নীড়হারা পাখিরা উড়ছে ঝাকে ঝাকে
রুদ্রনীল আমায় টানে তার দিকে
ইচ্ছে হয় ফিংগে হয়ে ঘুরি মেঘাকাশের ফাকে


টলটলে নীলজলের মহাসমুদ্র আমায় করে ইশারা
শত সহস্র মৎসজীব খেলছে সেথায় হয়ে দিশেহারা
সেই অভ্রনীল আমায় তার ভাটায় নিতে চায় পরম্পরা
ইচ্ছে হয় রংগীন জলজ হয়ে সাতড়িয়ে হই অধরা


ঐ পূর্ণিমার চাদের আলো আমায় কিঞ্চিত আশা জাগায়
অগনিত ধ্রুবতারা সেথায় ছুটে বেড়ায় আলোক শিখায়
শুভ্রতারা আমায় মোহিত করে  যেন ঝিকিমিকি অপসরা
ইচ্ছে হয় তারাদের সান্নিধ্যে যাই ভর করে প্রজাপতির ডানায়


ঐ দূর পাহাড় আমায় বিস্ময় জাগায় মনে মনে
ঠায় দাঁড়িয়ে পথিক দেখি তার শোভা ক্ষনেক্ষনে
পাহাড় চুড়া হতে পাদদেশ বলে এসো ঘুড়ি বনে বনে
ইচ্ছে হয় বসত গড়ি সেথা  ঐ সুবিশাল পাহাড়ের টানে


বাবা মা ও সন্তানের খেলা


গোধুলি সন্ধ্যায়,ঝিল জলে  স্নাণ করা পাখিরা
ফিরছে নীড়ে, ডানা ঝাপ্টিয়ে খাল বিলের ধারে,
নীড়ে প্রহরারত ছাপোষা,ক্লান্ত অসাড় বিকেল
হুতুম পেচার মত,ঠোট বাকিয়ে থাকে বাশঝাড়ে।


ঝাড়ে কিচিরমিচির শব্দ থেকে ঊথলে উঠা  দরদ
কিয়ৎ সম্বহিত ফিরে আসে পথিকের চলায়,
দখিনের খরকুটার জানালা থেকে কর্ণ উঁচিয়ে
অন্নের খোজে মুহ্যমান হয়ে ক্ষুধার্তের আর্তি জানায়।


মুখে অন্ন ভরে পালক নাচায়, আসে শরীরে ভেজা গন্ধ
উম্মুখ হয়ে থাকা পোষ্যরা গন্ধ শুকে দৌড়ে আসে
ভেজা পালকের মায়ায় জড়িয়ে আদরে আগলে ধরে
মুখ নির্গত অন্নজলে তৃষ্ণা জুড়ায়ে সুখানন্দে ভাসে৷


মমতার পরশে প্রাণের স্পন্দন চোখে মুখে যায় দেখা
দেখে তাই আসে জল,ফেলে পেছন দুয়ারে বসে,
শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে মন্থর হয় চোখের দরজাখানি
ঘুমিয়ে যায় আস্থার বাহুতে, মাঝখানে খোলা চোখ হাসে৷


ওরা নি:শব্ধে ঘুমায়, ভাবনাহীন স্বপ্নে কাটে দীর্ঘ রাত
স্বপ্ন দেখে মনে আর সীমাহীন আকাশ রাখে  প্রহরায়,
কত ঝড় বয়ে যায় কুচকুচে কালো মেঘের আড়ালে
আর অন্ধকারে বসে খসে পড়া তারাদের সাথে কথা কয়।


তারাদের সাথে,
কষ্ট এড়িয়ে অবাক-খুশির সুরে গান গেয়ে উঠে
এবারতো সকাল হলো উঠতে হবে উষার আগে
পালক ঝাপটিয়ে উষাকালে হাই তুলে যখন তাকায়
মা-ছানাদের কিচিরমিচিরে রাজ্য উঠেছে তখন জেগে৷



অসময়ে মরতে চাই


আমি মরতে চাই, কাদতে চাইনা
আমি মরতে চাই, কারো চক্ষুশুল হতে চাইনা
আমি মরতে চাই, ভীষন হেসে খেলে
আমি মরতে চাই, অবহেলার পাত্রে নয় ফেলে
আমি মরতে চাই, সব কিছু শেষ করে নয়
আমি মরতে চাই, কাউকে দোষী করে নয়
আমি মরতে চাই, নিজের অপরিসীম ধৈর্য্য নিয়ে
আমি মরতে চাই, সবাইকে ভালবাসা দিয়ে
আমি মরতে চাই, সবার চোখের জল মুছে
আমি মরতে চাই, সবার চোখের আবেগ ঘুচে
আমি মরতে চাই, সকলের মাঝে থাকতে
আমি মরতে চাই, হিংসায় না চাই জ্বলতে
আমি মরতে চাই, হিসেবের খাতা ফেলে
আমি মরতে চাই, সব দুঃখ গিলে
আমি মরতে চাই, রাস্তার কুকুড়ের কামড়ে
আমি মরতে চাই, বিদ্ধস্ত সাদা কাপড়ে
আমি মরতে চাই, রুদ্র নীল বিকেলে
আমি মরতে চাই, কারণ আমি বড্ড সেকেলে
আমি মরতে চাই, ঘন মেঘ বৃষ্টিতে
আমি মরতে চাই,  মৃত্যু শ্রেয় কারো দৃষ্টিতে
আমি মরতে চাই,পরিশ্রান্ত ছাপোষার মত
আমি মরতে চাই, কারন গায়ে শত ক্ষত
আমি মরতে চাই, গায়ে মেখে ক্ষতের গন্ধ
আমি মরতে চাই, তবু মিটে যাক সকল দন্ধ
আমি মরতে চাই, নষ্টের কালিমা মুছে
আমি মরতে চাই, ঘৃণ্যতা যাক গুচে
আমি মরতে চাই, মৃত্যুর গন্ধ শুকে
আমি মরতে চাই, মা মাটির বুকে
আমি মরতে চাই,  পরিচয় শুণ্য করে
আমি মরতে চাই, ঘুমাতে মাটির ঘরে
আমি মরতে চাই, পিপীলিকার মৃত্যুর মত
আমি মরতে চাই, সমাজ থেকে হতে চাই  গত
আমি মরতে চাই, বিভীষিকা সৃষ্টির আগেই
আমি মরতে চাই, আসছে কোন এক মাঘেই
আমি মরতে চাই, নবান্নের উৎসবের আমেজে
আমি মরতে চাই, শীতের কুয়াশায় ভিজে
আমি মরতে চাই, ফাগুন ছোয়া আগুনে
আমি মরতে চাই, প্রতিটা দিন গুনে গুনে
আমি মরতে চাই, প্রতি সেকেন্ড মিনিটে
আমি মরতে চাই, কারণ জীবন থেমে আছে গুমোটে
আমি মরতে চাই, ইহকালের খেলায় গেছি হেরে
আমি মরতে চাই, হারিয়ে ফেলেছি মন পৃথিবীর ভীরে
আমি মরতে চাই, পরাভুত সৈনিকের বেশে
আমি মরতে চাই, মৃত্যকে আলিংগন করবো হেসে৷
আমি মরতে চাই,