না, আমি কবি নই - নিতান্তই এক সৌখিন কবিতা পাঠক মাত্র! আমি কবিতা
পড়ি মনের আনন্দে - খুব ভাল লাগে; - কবিতার মতো কে আর দেয় এত
সুখ, এত ভাললাগা! তাই, কবিদের প্রতি আমার অপরিসীম ভাললাগা, ভালবাসা,
শ্রদ্ধা আর ঋণ জমে ওঠে। এই ভাললাগা, ভালবাসা, শ্রদ্ধা আর জমে ওঠা ঋণ
শেয়ার আমার প্রতিদিনের পাঠ থেকে কিছু মনে গেঁথে যাওয়া কবিতার এই
সন্নিবেশ; - এ শুধু কোন এক অন্য অবসরে আরো একবার-বহুপাঠে কাব্যরস
আস্বাদনের আয়োজন বা প্রয়োজন মাত্র।


আজকের ১১ কবির প্রতি আমার হৃদয়ের অকৃত্রিম উষ্ণতা নিবেদন! আর যাঁরা
কবি, হৃদয়-মেধা নিংড়ে কবিতা আনে এ কবিতার আসরে প্রত্যহ, যাঁরা এখানে
অবর্তমান  (‌হয়ত আমার অপ্রস্তুত পাঠাভ্যাসে), সেই সব কবি-হৃদয়ের প্রতিও
আমার ভালবাসা অন্তহীন! তাঁদের হাতেও আমার কাব্যরস পান ও প্রত্যাশা
নিরন্তর! আগামিকাল তাঁদের কবিতার মূগ্ধতায় ডুবে যেতে চাই!


কবিতা সুন্দরের প্রতিমা হয়ে আসুক, চিরন্তন হৃদয়-অনুভূতির ছবি হয়ে উঠুক,
মনন-শৈলীতে জেগে উঠুক, হয়ে উঠুক উজ্জ্বীবনের জীয়নকাঠি - এই চির
প্রত্যাশায় - সৌকপা।
--------------------------------------------------------------------


অর্কেস্ট্রার ভাঁজে - বাজে দুই পাড়ের দুঃখ
- মুক্তি আর প্রেম মানুষের জন্যে


সময়ে সময়ে সরে যায় সবাই
আপনজন প্রিয়তমা তোমার মতো সবাই
জীবনারণ্য ঘেঁষে অবহেলা-অনাদরে  পড়ে থাকে
পাখির নখে বেড়ে উঠা গাছ গাছালির মৃত-শোক লতা,
না পাওয়ার লকলকে দীর্ঘ চিত্র, একটি মানবিক ফ্রেম,
একটু আলোড়ন - কিছুমাত্র করুণা তোমার দেয়া ক্ষমায় প্রাপ্তিটুকু যে পথ
দিয়ে গেছে-
               ভালই আছে  


খামখেয়ালী মধ্য-দুপুর তোমার মতো
কথা দিয়ে রেখে যায় -
উদ্ভ্রান্ত বিরান প্রান্তরে রাজ্যব্যাপী এক নগরের নীরবতা,
প্রণয় সর্বস্ব পথে পথে যে সম্পর্ক বহুদিনের
পিতৃহীন সবুজ তোমার মতো কথা দিয়ে সে পথে বুনে যায়
রিক্ত বালুচরে সারি সারি  দীর্ঘাঙ্গী দুঃখগুলো-  
    
যাবো যাবো বলে বাড়ছে বেলা
সম্মোহনী রাত আগুনের উপর হামাগুড়ি খেয়ে পড়ছে,
পুড়ছে একাই পুড়ছে,
পাখিদের অসংলগ্ন আনাগোনা ব্যক্তিগত কারাগারে বসে বসে
বাড়াচ্ছে হাহাকার, বিনিময়ে রুদ্রময় আত্মনির্বাসন -
একটাই সম্বল, বহুদিনে বেড়ে উঠা প্রবাল
জমে প্রতিবার লুকায়
                        যে পথ দিয়ে দুঃখ গেছে
আমার নখ- চুল- চিবুক- বিবেক- বিশ্বাস একে একে      
                                                      সর্বাঙ্গ দংশন করে
                                    


এ যেন আজন্ম সর্বান্তকরণ।    


--------------------------------------------------------------------


গর্ভবতী কুমারী বৃক্ষ
- জি,এম, হারুন-অর-রশিদ


সূর্যকে গ্রাস করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে
যে বৃক্ষ জন্মেছে
সে আজ গর্ভবতী,
কিশোরী থেকে যুবতী হতে মাত্র
দুটি বসন্ত সময়।
যৌবনে পা দিয়েই হয়ে গেল দিশেহারা
ইচ্ছেমত ডালপালার স্বাধীনতা দিল।।
একটা ডাল তখনই আমার
জানলা স্পর্শ করেছে,
রাতে ঘুমোতে যাবার পূর্বে
সমস্ত পাপ ক্ষয়ে যাবে,
এই আশায় প্রতি রাতে
কুমারী বৃক্ষকে স্পর্শ করতাম,
ফিস্ ফিস করে সারা রাত্রি
দুজনে কথা বলতাম-
আমার সমস্ত পাপ সে সময়ে
তার কাছে স্বীকার করতাম।
সারা রাত্রি একটু সময়ের জন্য
বিচ্ছিন্ন হতাম না,
শুধু সূর্য্যের ইশারায়
দুজনে সরে যেতাম,
সারাদিন অপেক্ষার সময় গুলো খুবই দীর্ঘ।।


এক সকালে বৃক্ষের দিকে তাকিয়ে দেখি
রক্তাত হয়ে আছে সমস্ত বৃক্ষ লাল ফুলে
সে লজ্জামাখা কন্ঠে বলল-‘’আমি এখন ফলবতী’’
আমি অনুতপ্ত হয়ে বললাম
‘’আমি এর কিছুই জানিনা,
আমি এর জন্য প্রস্ত্তত ছিলাম না।।‘’


--------------------------------------------------------------------


ঝুটমুট
- শুভাশীষ সিংহ


দোহাইয়ের সম্পর্কে আক্ষেপই সম্বল
শহরসুদ্দ লোকের মান-অভিমানের প্রশয়ের বাতিকে অবিরত.........
দশটা-আট্টার মড়োয়ারির আদমির
পারিতোষিক মুহূর্তে কিছু অবশেষ থাকে কি?
ঝুটমুট তোকে মনে করব পতত্রী সে অবকাশ কোথায়?
দিনপঞ্জিকার কাটাকুটির খেলায় দুনিয়ার প্রজনন আর গমন
সেখানে বসন্তের পয়গম্বরের ডাক খুব কর্কশ লাগে মন্দিরা
ঝুটমুট তোকে মনে করব মন্দিরা সে অবকাশ কোথায়?


“এই বেশ ভাল আছি”
কথাটা অতি পরিচিত হলেও
নিমপাতার মত স্বাভাবিক মিষ্টতা আছে
তাতে তোরা মনঃখুন্ন হয়েছিস ঠিকই
আমার চলতে সুবিধা হয়েছে ফুটপাতের ফেড়িভীড় বরাবর


সাময়িক বিরতির পর জেদ ময়দানে নামে
বর্ষা হয়ে ছুঁতে চাস আমায়
ভিতরে কিছু ভাঙার শব্দ পাই
তোরাও পাস
ছুটে আসিস পাঁচমেশালি মন নিয়ে
বিড়ম্বিত যন্ত্রনায় চৌরঙ্গির সিগন্যাল পাড় হয়ে যাই(আড়চোখে)
আমার একাকিত্তের খোলস আগলে তোরা ঠায় দাঁড়িয়ে
ঝুটমুট তোদের মনে করব সে অবকাশ কোথায়?
তোদের মনে করাটা অলৌকিক বীর্যপাতের মত
সে সত্যকে ব্যতি রেখেই নাতিদীর্ঘ যাত্রায়.........


কেনো বুঝিস না পতত্রী?
কেনো বুঝতে চাস না মন্দিরা?


তোরা যে পথে যাতায়াত করিস
আমার বৈরাগ্য সেখানে শ্যামের বাঁশি শোনে


--------------------------------------------------------------------


আশ্রয় দাও, কবিতা
- রিপন গুণ


সবারি আছে অধিকার বিচ্ছিন্ন হওয়ার
সবারি আছে আশা সংযুক্ত হওয়ার,
এক একটা পাতা খসে, হাওয়ায় ভেসে যায়
এক একটা পাতা যুক্ত থাকে যুগান্তরে
কেউ হাসে, খেলা করে সচল অবলীলায় -
কেউ হাসে মরণোন্মুখী ব্যগ্রতায় ।


বন্ধুর দেখা মেলে ছবিতে, কবিতায়
উল্লাস খেলা করে সমুদ্রের পারে,
সবিস্তারে লেখে নিয়তি গল্প ও গান
পরিশেষে আসে মীমাংসা ও ব্যপ্তি ।


আশ্রয় দাও কবিতা…..
বর্ণ জুড়ে জুড়ে শব্দ, শব্দ বুনে বুনে পাহাড়
অনর্থক কথার পাহাড় জমে জমে ফসিল
কবিতা হয় না একটা......
নৈঃশব্দ জমে জমে বরফ, বরফ জুড়ে জুড়ে হিমবাহ
নিরন্তর বরফের চাঁই নিয়ে আসে শীতল ঘুম
স্রোতঃস্বীনীর দেখা মেলে না ।
গলি জুড়ে জুড়ে পথ, পথ জমা হয় রাজপথে
অনর্গল পথ হাঁটাই সার, অকারণ বিলাপ
যাওয়া হয় না কোথাও ।


জল জমে জমে কান্না,কান্নার দহনে বাষ্প
কালান্তক তমসা জুড়ে থাকা মনপ্রাণ
হৃদয় হারিয়ে যাওয়া শুধু ।


কথা জড়ো হয়,বুড়বুড়ি কাটে,উপছিয়ে পড়ে
দু’ ঠোঁটের ভেতরে অনর্গল উচ্ছাস,
হারিয়ে যায় মন, ভেসে আসে সুর -
বাঁশীওলা ডাকে, বেটোফেন বাজে
দ্রীম দ্রীম বাজে মাদলের গান ঢেউ তোলে বুকে ।


কথা বুজে আসে, সুর মুছে আসে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাতাস
কে আছো কোথায়, করো আমার করস্পর্শ !
পিছলিয়ে যায় মন ধরা দেবে না বলে
হেরে যেতে যেতে ফিরতে শেখেনি সে,
কবিতা নিয়েছে ছয়টি, বন্ধ হয়েছ, রসস্রোত
ধারাবিবরণী দিয়েছে সকলে,কেন জানি মন উন্মন!
মনের জানালা খোলা চীরকাল
সাঁঝের বাতাস হাত বোলায়,
লুকনো রহস্য নিয়েছ বিদায়
খোলামেলা সবায়তন ।


আমি কি পড়েছি বাতিলের দলে,স্থান অকুলান হল?
মনে দ্বিধা, ত্রাস সন্চ্ঞার, করেছে শ্রান্তি ভীড়
কবিতা, কবিতা কোথায় তুমি, দাও আশ্রয় - নীড় ।


--------------------------------------------------------------------


সে যে বাতাসের মতো এসেছিল
- সাগর কাজী


সে যে বাতাসের মতো এসেছিল ,
প্রভাত লগনে শিশিরের মতো ক্ষনিকের হাসি হেসেছিল ।
সে যে এসেছিল ;
হাসি হেসেছিল ।


কি মোহ কি সুখ বিরহ কি দুখ ছিল কি সে ?
সে যে উদয়ে অস্তে একাকার হয়ে আমাতেই মিলেমিশে ।
সে যে এক মায়া ছবি এঁকেছিল ,
আমার হ্বদয়ে সে ছবির রং রংধনু সাজে মেখেছিল ।
ছবি এঁকেছিল ,
রং মেখেছিল ।


আঁধারে আলোকে পলকে পলকে খুঁজি তারে ,
সে যে ক্ষনিকের স্মৃতি দিয়ে টেনে ইতি চলে গেছে পরপারে ।
সে যে সন্ধ্যা গগনে ভেসেছিল ,
ছলছল চোখে চেয়ে থেকে সে যে এক ফালি হাসি হেসেছিল ।
সে যে ভেসেছিল ,
হাসি হেসেছিল ।।


--------------------------------------------------------------------


মেঘমালা, ওগো তুমি কন্যে।।
- ইন্দ্রলেখা ভট্টাচার্য্য


আমার শহরে আজ বৃষ্টি।
আমার শহরে আজ বর্ষা।
তোমার চোখের জলে নষ্ট,
রোদের লুকোনো আশা-ভরসা।


কাক-দীঘি করে ঐ টলমল,
ছাতা খুলে ছোটা অফিসের দল,
তোমার দুচোখে দেখি ভরা জল,
কালো হলো মিঠে মুখ, ফরসা।


মেঘমালা, ওগো তুমি কন্যে,
ল্যাপি খুলে কাঁদো কার জন্যে?
তারি মাঝে সিনিয়র করে call,
বোনে জাল, শিকারী মাকড়সা।


মেঘমালা, রূপকথা মিথ্যে,
ইঁদুরের ছুটে সব হারালো।
হারিও না তবু তুমি লক্ষী,
হারিও না মধু-হাসি, সরসা।


--------------------------------------------------------------------


বাংলা মাঝে জন্ম আমার
- সুবীর কাস্মীর পেরেরা


(বাংলা কবিতার সকল কবি বন্ধুদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, আজকের কবিতাটি কবি অরুন কারফা, কবি মহারাজ, কবি স্বপ্ন্বাজ, কবি সাইদুর রহমান, কবি কবীর হুমায়ুন, কবি পৌষের কোকিল (মন), কবি মুনীর, কবি দীপক, কবি ছোট কবিতা, কবি সুশীল রায়, কবি অহনা, কবি মো: আনোয়ার সাদাত পাটোয়ারী, কবি সুদীপ তন্তুবায় (নীল) ও কবি মুস্তাফা গোলাম এর তরে নিবেদন করলাম। ধন্যবাদ---আপনাদের সুবীর)


রবির দেশে জন্ম আমার, কাজীর দেশে বাস,
রবি-কাজী বাংলা ভাষার অমর ইতিহাস।
বাংলা মায়ের বুকে আঁকা , কাব্য উপন্যাসে,
সুনীল-শামসুর-নির্মলেন্দুর অমর কথা ভাসে।
বাংলা গানের মর্মকথা অন্তরাত্মা মাঝে,
মান্না-ভূপেন-হেমন্তের গান নিত্য কানে বাজে।
আমার গাঁয়ের গঙ্গা-পদ্মায় স্রোতধারার বুকে
কৃষক-মাঝি-আউল বাউল চলছে মনের সুখে।
সোনামাখা সোনা রোদে শিশু-কিশোর দলে
স্বরলিপির পুস্তক লয়ে বিদ্যালয়ে চলে।
সকাল-সন্ধ্যা আযান শুনি, উলুধ্বনি রোজ
এমন ধ্বনি পাবে কোথা যতই খোঁজা-খোঁজ।
আমার গাঁয়ে হাজার তারা, আমাবশ্যার রাতে
যাবে বন্ধু, যাবে তুমি দেখতে আমার সাথে?
জোছনা রাতে উঠান মাঝে দাদির গল্প শোনা
হাতের স্পর্শে  ঘুম এসে যায়, নানান স্বপ্ন বোনা।
শীতের সকাল পিঠা-পায়েস, মায়ের হাতে যাদু
আড়ি পেতে দেখবে তোমায় সরল সহজ বধু।
বর্ষাকালে বৃষ্টি ঝড়ে, টিনের চালের পরে
গুণগুণিয়ে গানের তালে আলো আছড়ে পড়ে।
বাড়ীর পাশে রেলের ধারে কিসের আওয়াজ শুনি?
ঝন ঝনাঝন ট্রেন ছুটে যায়,আমরা শুধু গুনি।
বিকেল বেলা মাঠে আসে ছেলে-বুড়ো দলে
নানা প্রকার খেলা-ধূলা, সন্ধ্যাবদি চলে।
সবুজ শীতল শ্যামল ছায়া আমার জন্মভূমি
ধন্য আমি বাংলা পেয়ে বারে চরণ চুমি।


--------------------------------------------------------------------


প্রেম, সুখ, দুঃখ ও স্মৃতি
- সৈয়দ জাহেদ হোসেন


আমার প্রেমকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি
আমার দু:খ গুলোকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি,
আমার সুখ গুলোকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি,
শুধু জেগে আছে আমার স্মৃতি গুলো।
নানা রঙের স্মৃতি,
নানা ধরনের স্মৃতি,
নানা গন্ধের স্মৃতি।
প্রেম, সুখ আর দুঃখ গুলো আমার হৃদয়ের গহীনে মিশে একাকার,
আলাদা করার কোন সুযোগ নেই,
জীবন থেকে পালানোরও কোন পথ তাদের জানা নেই।
স্মৃতিরা দিন দিন বুড়ো হয় কিন্তু কখনো যৌবন হারায় না,
টগবগে চির তরুন স্মৃতি গুলো মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকে।
অন্যদের মাঝে।


আমার দুঃখ সুখ গুলো শীত এলে শুকনো পাতার মত মর্মর হয়,
বসন্ত এলে সবুজ হয়ে প্রান ফিরে পায়,
গ্রীষ্মের খরা তাপে তপ্ত হয়েও কালবৈশাখীর সাথে নেচে উঠে।
দ্রুত ধাবমান স্মৃতি গুলো পৃথিবীর মত কক্ষ পথ অতিক্রম করে বলেই
বার বার ফিরে আসে,
কখনো রং বদলিয়ে, কখনো রূপ বদলিয়ে।
প্রেম, দুঃখ, সুখ আর স্মৃতি
কত নিরেপক্ষ!
তারা কখনো দেখে না তোমাকে আমাকে,
তারা কখনো দেখে না, আমার দারিদ্রতা কিংবা তোমার প্রাচুর্যকে।
তবুও আমার অভিযোগ, তোমার অভিযোগ,
তাই আজ আমি সকল অভিযোগ থেকে মুক্তি দিতে
ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি তাদের।
শুধু স্মৃতিকে জাগিয়ে রাখলাম নিজের জীবনের জন্য।


--------------------------------------------------------------------


চন্দ্রালোকে বজ্রপাত
- সরকার মুনীর


গণ্ড মূর্খের সাথে পারা যায় না
যায় না নিজেকে এতো নীচে নামাতে।


দৃষ্টি জুড়ে থাকে শর্ষের খেত
গালে থাকা হাত চলে আসে মাথায়।
কে থামায় এ অরাজকতা -
সর্বগ্রাসী অভব্যতার অগ্রযাত্রা।


লজ্জার মাথা খেয়ে, বিবেকের পায়ে পড়ি
পরিত্রাণ নেই তবে ত্রাণ আছে—
মোটা দাগে থেকে যাও স্থূল বলয়ে
সূক্ষ্মতম শুচিতাও লুকানো থাক আড়ালে।


--------------------------------------------------------------------
১০


নাচনা এবার থামা
  কবীর হুমায়ূন


নাচনা এবার থামা রে তুই-
নাচনা এবার থামা;
নইলে তোরই মাথার ’পরে
মারবো রে ইট ঝামা,
নাচনা এবার থামা।


কিসের বড়াই করিস রে তুই-
কিসের বড়াই করিস?
মদ্য-মত্ত হয়ে তুই যে
ঘাস ফড়িংটি ধরিস!
কিসের বড়াই করিস?


জানিস কি তুই ঝাঁকে ঝাঁকে-
ফড়িংয়েরা লুকিয়ে থাকে,
চরম সময় গরম হলে-
জাগে তারা দলে দলে,
মরন কামড় দিবে বলে
দাঁত করে তার তামা।
নাচনা এবার থামা রে তুই
নাচনা এবার থামা।


--------------------------------------------------------------------
১১


যুগল এপিটাফ
- ছোট কবিতা



এখানে শুয়ে আছে - রাজনীতি।
একদিন তার অনেক গ্রহণযোগ্যতা ছিল - মাটি ও মানুষের ভাষা ছিল।
একদিন তার অনেক প্রয়োজনীয়তা ছিল - মাটি ও মানুষের দাবি ছিল।


এখানে শুয়ে আছে - রাজনীতি।
একদিন তার গ্রহণযোগ্যতা ফুরিয়ে গেল - স্বার্থ, সন্ত্রাস আর মাফিয়ার ভাষা হল
একদিন তার প্রয়োজনীয়তা  ফুরিয়ে গেল - মাটি ও মানুষের কথা ভুলে গেল।



এখানে পড়ে আছে - রাজনৈতিক নেতা।
একদিন তার অনেক জনপ্রিয়তা ছিল - মাটি ও মানুষকে ভালবাসতো
একদিন তার অনেক দেশপ্রেম ছিল - মাটি ও মানুষকে ভালবাসতো
একদিন তার অনেক প্রয়োজনীয়তা ছিল - মাটি ও মানুষের কথা বলতো।


এখানে পড়ে আছে - রাজনৈতিক নেতা।
একদিন তার জনপ্রিয়তা ফুরিয়ে গেল - স্বার্থ ও স্বজনপ্রীতি গ্রাস করেছিল
একদিন তার দেশপ্রেম ফুরিয়ে গেল - সন্ত্রাস, খুন, ধর্ষণ ও কালোবাজারে মেতেছিল
একদিন তার প্রয়োজনীয়তা  ফুরিয়ে গেল - মাটি ও মানুষের কথা ভুলে গিয়েছিল।


--------------------------------------------------------------------