বিজন মরুর আঁধার তিমিরে
পথ চলছেন একা একী,
কাছে দূরে কোনো বাড়ি পেলে
দেখছেন দিয়ে উকিঝুকি।
ঘরের কে কি কথা কয়
কোন ঘরে কে বা ভুখা রয়
আঁধারের অতলে দিনের অনলে
কে বা দিয়েছে কারে ফাঁকি?
সব জেনে সব শুনে; অভাবীর অভাব
মেটান তিনি, খাদ্য নিজ কাঁধে টেনে।
কিংবা যার যা কিছু দরকার
দিয়ে যান তাই স্বয়ং নিজে এনে।
কোনো এক রাতে সবারি অজ্ঞাতে
উঠে এলেন তিনি ও বাড়ির আঙ্গিনাতে,
দরজায় রেখে কান তিনি শুনতে পান
বৃদ্ধ মা মেয়ে কথা বলছে দু’জনাতে।
রাত্রি থাকিতেই দুধে দিয়ে নাও পানি
বুঝই তো মাগো অভাবের সংসার,
চলে করে কতো টানাটানি।
মেয়েটি এবার বলে উঠে-
মায়ের কথা না হতেই শেষ,
মা! দুধে পানি দেওয়া যাবে না
শুনোনি উমরের নির্দেশ?
মা বলেন ওরে বাছা!
দুধে পানি দিলে উমর দেখবে তা কি?
এই গহীন রাতে আমাদের চৌকাঠে এসে
উমর কান পেতে আছে নাকি?
মেয়ে বলে মাগো! তুমি তো সহজেই
উমরকে দিতে পারবে ফাঁকি,
তবে বলো শুনি, আল্লাহকে তুমি
ফাঁকি দিতে পারবে নাকি?
রাত্রি যতই হোক নিকষ কালো
আঁধারের অতলে হারাক যতই দুনিয়ার আলো
তবুও তিনি দেখছেন তো সবি,
বলো মাগো বলো
পানি দেবো কিনা এবার বলো দেখি?
মেয়েটির কথায় আল্লাহর ভয়ে
মায়ের মন হলো ভরপুর,
দুধে পানি মেশানো তো দূরে থাক
দিল্ তার তাকওয়ায় হলো টইটম্বুর।
এদিকে মেয়েটির কথায়; মেয়েটির তাকওয়ায়
আড়ালে থেকে উমর হলেন মুগ্ধ বিমোহিত।
খুশির জোয়ারে হৃদয়টি তার হলো পল্লবিত।
যা কিছু ভাবার ছিল; উমর নিলেন তাই ভেবে,
হীরের এমন টুকরো পেলে কে বলো তাকে ছাড়তে চাবে?
বিয়ের পয়গাম দিয়ে পরদিন প্রাতে
খলীফা স্বয়ং দূত পাঠালেন সেই বৃদ্ধার বাড়িতে,
দূত জানালেন, খলীফার মনের একান্ত ইচ্ছা
আপনার মেয়ের বিয়ে হোক উমর পুুত্রের সাথে।
তারপর আর কি? অবশেষে বিয়ে হলো
গরীবের মেয়ের খলীফা পুত্রের সাথে।
আর বৃদ্ধা গরীব- রাজ পুত্তুর জামাই পেলো
শুধু মেয়ের তাকওয়ার বদৌলতে।