বহুদিনের বহুদূর যৌথ চলা, হাত ধরাধরির ছলে,
দিগন্ত রেখায় অনিশ্চিতে হাঁটা,
জড়তা ভাঙার নিরব প্রতিযোগিতা হল অবশেষ।
অবশেষে দুটি জীবন নৈর্ব্যক্তিকতায় বাঁধা পড়ল।
তোমার, আমার যাপিত যৌথ জীবন, জীবনের প্রতিটি পরত,
প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষণ,
কী এক অব্যক্ত অর্থহীনতায় ডুবে গেল নিঃশব্দে।
নিস্তরঙ্গ সময়ের গহিনে।
হঠাৎই, সব হয়ে গেল অর্থহীন, লক্ষ্যহীন।
অর্থহীন প্রতিটা প্রহর।
ছন্দহীন প্রতিটা ভোর।
স্থবির সময়, অর্থ খোঁজে নিশ্চল ক্যালেন্ডারে। এ যেন
অতলান্তিকের তলা খোঁজায় অহেতুক শক্তি ক্ষয়।
জীবন যেখানে শুধুই ব্যর্থতায় বাঙ্ময়।
সে নিদারুণ অব্যক্ত জগদ্দল সময়,
চেপে বসে বুকের ওপরে, আঘাত করে সবেগে,
হৃদয়ের বন্ধ কপাটে, আমৃত্যু।
রোদন করে ভাগ্যদেবতার ঊষর ললাটে।
রুদ্ধ করে সবটুকু বেঁচে থাকার বাসনা।
রুদ্ধ করে বেরোনোর সব পথ।
হাতরে মরে আঁধারে।।
নৈর্ব্যক্তিক এই বাস্তবতায়,
তোমার হাতে রাখা হয় না হাত,
চোখে চোখ রাখা, মনে মন-সবই রহিত হয় অনিচ্ছার আচ্ছন্নতায়।
অতীত প্রেমের প্রগাঢ়তা ডোবে লোহিত সাগরে।
সাহসেরা মৃতদেহের কর্পূরের মতো উবে যায় কোন মরুর লাল বালুর অতলে।
ইচ্ছেকে ঘিরে ধরে রাশি রাশি কালো ছায়া,
তার উৎস থাকে না জানা। তাকে প্রশ্ন করা মানা।
কেবল তাকে অনুভব করা যায়।
চোখের সামনে একটু একটু করে নিজেকে নিভতে দেখার সাক্ষি হতে হয়।
তবু সেই অব্যক্ত সময়ে মন বিদ্রোহ করে,
ফিরে পেতে চায় তার সবটুকু লুপ্ত প্রাণ।
খুঁজে ফেরে অতীত।
আর অতীতের স্মৃতিময় আখ্যান।