যেদিন প্রথম বুঝতে শিখি
ভাবতে শেখার যেদিন হাতেখড়ি, সেদিন থেকে
সুখের খোঁজে হ্যাংলার মতো কাটিয়েছি প্রহরের পর প্রহর।
এক আঁজলা সুখের জন্য, বিন্দু বিন্দু সুখের জন্য হ্যাংলামো,
বয়সের ছাপের মতো সেও আমার পুরোনো বাতিক।
মা ন্যাওটা শিশুর মতো সুখের ন্যাওটা আমি।
এ বোধহয় এক সুখের অসুখ আমার।
এ অসুখ, অনেকটা পুরোনো চিঠির জন্য প্রেমিকের অহেতুক কাতরতার মতো।
অথবা, পুরোনো প্রেমিকার মতো। ভোলা যায় না, অথচ ভুলে থাকা যায়।
ভুলভাল পৃথিবীতে, আমার বয়স বাড়ছে বেয়ারাভাবে,
কপালের ওপরে আধাপক্ক কেশ তার জানান দেয় প্রতি রোজ।
তবু সুখ পিয়াসীতার কমতি নেই হররোজ।
তোমার কাছে এক-আধলাটুকু সুখের জন্য যত বায়না আমার।
অপরিপক্ক কিশোরের মায়ের আঁচল ধরে অষ্ট্রপ্রহর ঘ্যানঘ্যান করার মতো-
আমি তোমার কাছেই ফিরে ফিরে আসি। মুঠোখানেক সুখ যে চাইই চাই আমার।
এমনিতে দিব্যি পুরুষালি পুরুষ,
শুধু তোমার কাছে এলেই ভিরু কাপুরুষ।
ক’ফোটা সুখের আশায় এই প্রবল অবনমন।
এ যেন প্রজ্বলিত অগ্নিতে কাঁচপোকার স্বেচ্ছা সহমরণ।
স্বেচ্ছায় পাপের নরক আবাহন।
সেই যে কবিগুরু লিখেছিলেন-বাজিল বুকেতে সুখের মতো ব্যথা।
তোমার উপহাস, নিদারুন অবহেলা,
তেমনই সুখের ব্যথায় বিবশ করে দিন রাত।
তবুও আমি তোমার অস্তিত্বের আশপাশে অবিরত,
হ্যাংলার মতো আনাগোনায় হই রত।
সে শুধু কিঞ্চিত সুখের নিমিত্তেই।
না, সে নারীর কাছে নরের চিরাচরিত,
আধো পবিত্র, আধো আদিম সুখের নেশা নয়।
এই সুখ এক পবিত্র সুখ। এক অনাবিল সুখ।
হয়তো তার অন্য নাম শান্তি। তাকে আপনার করে পেতে নেই ক্লান্তি।
তোমার ক্ষণিকের কাছে আসা,, পরক্ষণেই দুমড়ে মুচড়ে একাকার করে দেয়া হৃদয়ের পুরোটা।
একটু কৃত্রিম রাগ, ছলনার নতুন নতুন মাত্রা-সেটুকু দেখাই আমার সুখ।
সেই সুখের তরেই ফিরে আসি বার বার।
যেমনটা ধানসিঁড়ির তীরে, জীবনানন্দ চেয়েছিলেন আসতে ফিরে।
আমি ফিরব তোমার কাছে। আরো একটি বার।