যে-ই দায়িত্বে করবে অবহেলা, সে-ই হবে দেশদ্রোহী
যে ছাত্র করবেনা পড়াশুনা, অ-ছাত্র হয়ে গড়তে সাহায্য করবে না নিজেকে,
সুষম জ্ঞানে আলোকিত-যোগ্য নাগরিক রূপে।
কিংবা যারা দায়িত্বে করে অবহেলা-শিক্ষাঙ্গন, প্রশাসন, ব্যাংক, বীমা, সংসদ, মন্ত্রণালয়,
চিকিৎসা সেবায়, কৃষিকাজে, সাংবাদিকতায়, সংস্কৃতির অঙ্গনে, শিল্পে কিংবা ব্যবসায়-বানিজ্যে;
তোমরা যে-ই হওনা কেন, তোমরা হবে দেশদ্রোহী।
আমরা তোমাদের একে একে করবো বিচার-ঝোলাবো ফাঁসি কাষ্ঠে
স্বদেশ প্রেমের জনতার আদালতে।
যারা সমাজের কারিগর-তোমরা গড়ো রীতিনীতি,
জাগাওনা বিবেক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের
সরাওনা অন্ধকার জাতীয়তা বোধে-বিপন্ন স্বদেশ প্রেমে।
এ দেশটি কার? আমাদের সব্বার-দোয়েলের কোকিলের
কবি ও বাউলের, সমগ্র বাঙালীর।
মাঠে ঘাটে, কিষাণের ক্ষেতে, নগরীর রাজপথে
মায়ের মমতাময়ী চোখে
ফুলের শোভায় বিছিয়ে রেখেছে স্বদেশ।
সে মায়ের চোখ তোমরা অন্ধ কোরোনা,
ঘৃণা বিদ্বেষে মায়ের স্নেহের আঁচলে জ্বেলোনা আগুন
বন্ধ কোরোনা স্নেহের দরজা চিরতরে।


এ মায়ের আঁচল তলে-লক্ষ শহীদ আছে ঘুমায়ে
আছে রক্তে ভেজা লক্ষ শহীদের কবর। সন্তার হারানোর শোকে
মধ্য রাতের নীরবতায়-এখনো গুমরে কেঁদে ওঠে। তোমরা কি
একটুও বুঝতে চাইবেনা-এ বিহ্বল শোকের মর্ম ব্যথা।
তোমরা বাঙালী হয়ে, ছুঁড়োনা পেট্রোল বোমা, চাপাতির কোপে
বুনোনা উগ্র সন্ত্রসবাদ-অপমান করোনা
এক সাগর শহীদের রক্তকে।
হিংস্র শেয়াল-শকুনদের-বাঁধাতে দিওনা বাসা আমাদের পতাকায়,
উস্কে দিওনা সাম্প্রদায়িকতা-ধর্ম রাজনীতির তুলোনা তর্কের ঝড়,
ধর্ম ব্যবসায় আর ব্যবহার করোনা আমাদের।


যারা মুসলিম তারা মসজিদে যাবে, যারা হিন্দু তারা যাক মন্দিরে
খ্রিস্টান যারা তারা যাক গীর্জায়, যারা বৌদ্ধ তারা যাক প্যাগোডায়।
ধর্ম নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে-নেই কোন বাঁধা
একান্নবর্তী এ বাংলার যোথ পরিবারে।


আমাদের সবার একমাত্র ও শেষ পরিচয়-আমরা বাঙালী
আমাদের অস্তিত্বে শহীদের রক্তে ভেজা পতাকায়
অন্যায় অবিচারের ক্ষুব্ধ প্রতিবাদী-বন্দিশালার দূর্গ থেকে
আমাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা
ভীষণ পৌরুষে বেড়ে ওঠা, বাংলা ও বাঙালীর আত্ম পরিচয়।


এসো তাই- এ স্বদেশ- এ জন্মভূমি
এ মায়ের স্নেহাদ্র আঁচল তলে-আমরা দৃঢ় শপথ বাক্যে যূথবদ্ধ হই
সম্মিলিত ভাবে-যে যার দায়িত্ব পালনে দেশকে এগিযে নিই
সেবা করি মাটি ও মায়ের।


আমরা কেন থাকবো পিছিয়ে-
অবহেলায়-অনাদরে মায়ের মন কেন যাবে কেঁদে
মায়ের মধুর স্বপ্নগুলো কেন যাবে ঝরে
আমাদের পতাকা শহীদের রক্তে ধুয়েছি একাত্তরে
এখন এসেছে সময়-
আমাদের সম্মিলিত শ্রমের সবুজ ঘামে
জাতীয় পতাকার ধোবার দেশকে এগিয়ে নেবার।


অবাক বিস্ময়ে বিশ্ব দেখুক
শিশির ভেজা ঘাসের বুকে হাঁটছে আমার দেশ
দোয়েল শিষের মিষ্টি সুরে-গাইছে আমার দেশ
ভোরের সূর্য সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ
রক্তে ভেজা স্বাধীনতার-হৃদয়ের বাংলাদেশ।