"কইল পোড়ামুখী, তর মা কই ?
ডাইক্যা দেছেন একবার তারে
একটা কথা জিগাই "-এই ভাবে এই সুরেই
বাড়ির ভিতর প্রবেশ করল
সুনামগঞ্জের তালুই ।
দাওয়ায় বসে হাঁক ছাড়ল আবার,
"কই গেলিগো মা, এক ছিলিম তামুক দ্যাছনা
ওঁক্কা'ডা জানি কই !"
ততক্ষণে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো শম্পা
তার আগেই তার মা এগিয়ে দিল হুঁক্কা ।
প্রণাম করে আড়াল হয়ে দড়জার ওপাশে  
নরম সুরে  প্রশ্ন করে, "বালা নি তালই ?"
তালুই যেন উঠলে জ্বলে হুঁকোর টিক্কার মতো
"আমার আর জিগাইছ্ না, আর জ্বালাইবি কত !
হামুইক্কা'দ মইরা গেছে, দুই বছর অইল
তর্ বাপ্ কি তরে ঘরের মধ্যে কোনাইল্ল্যা দিব ?"
কথার ঝাঁজে শম্পার বুকে ছ্যাৎ করে উঠল
ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘরের মধ্যে গেল ।
শম্পার মা বিনম্র স্বরে বলিল ,"বেয়াই,
মায়া'ডা আমার ত কোন দোষ করে নাই,
আপনে ক্যারে হুদাহুদি চ্যাতাচেতি করেন
আসল কথাডা কিতা, খ্যুইল্যা যদি বলেন !"
"কি আর কমু তোমডার কতা, পোলা বিয়া করাইছ
এর লাইগ্যাই আমার  মাথা ব্যাতা, বিয়ার কথা ভাবছ ?"
তালুই'র যেন রাগ থামেনা, হুঁকো টানে গরগরিয়ে
শম্পা ঠিক বুজতে পারে, এসেছে সম্বন্ধ নিয়ে ।
বাইরে বসন্ত চৈত তপ্ত দুপুর প্রখর রোদ
গাছে গাছে কঁচি পাতা মিষ্টি সুবাস মিষ্টি বোধ ।