গুঞ্জন তুমি শুনতে পাচ্ছ ?
আমি তোমাকে ভালবাসি,
ভালবাসি তোমার হাসি,
তোমার হাসির বেলায় বসে যাওয়া
গালের ওই টুল খানি,
তুমি হাসছ !
অনেক চেনা শব্দগুলো আবার তুমি শুনলে বলে ?
সে তুমি যাই ভাব ; যাই বল ,
সাগরের ঐ গভীর জলে যেখানে তিমিরা কথা বলে,
অরণ্যের ঐ গহীন পথে যেখানে পাখিরা সুর তোলে,
আকাশের ঐ মহাশূন্যে দৃষ্টি যেখানে যায় হারিয়ে,
আমি অনেক অনেক বার তোমার নামের হৃদস্পন্দনে
পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে -রক্তের লাল স্পর্ষ করে করে
অতল সাগরের তল বেয়ে যত্ন করে ;
তোমার জন্য তুলে রেখেছিলেম আমার এই কথা গুলো,
বনে বনে ঘুড়ে ঘুড়ে হিংস্র শার্দলের নখ ছিরে
দাবানলের অগ্নি শিখায় লিখে রেখেছিলেম ,
পেঁজাতুলোর সাদা মেঘের দেশ শেষের অনন্ত নীলে
শত সহস্র কোটি কোটি প্রতিধ্বনির কম্পনে,
রেখেছিলেম যত্ন করে - কথার দ্রবীভূত করে
তোমায় আমি বলব বলে "আমি তোমাকে ভালবাসি" ।
বসন্তের পাটিগনিতে আজ বড়ই ক্লান্ত তুমি - আমি জানি,
কিন্তু আমার এ বলাটা যে বড়ই প্রয়োজন - আমার জন্যে ।
জান গুঞ্জন,
  লাল পলাশের সেই দিনগুলিকে অবহেলায় পাশ কাটিয়ে,
  বইয়ের কালো রংয়ের ভীড়ে রঙিন পৃথিবীটা
মিশিয়ে দিয়ে,
  তোমার রাত জাগা রাতে মশাল হাতে পথে ঘাটে ক্ষইয়ে ক্ষইয়ে,
  এখন আমার হিসেব খাতার পাতা শেষের শেষ পংক্তিতে,
  ভীষণ ভীষণ ভীষণ ভাবে উপলব্দিতে ঠাঁই পেয়েছে-
তোমায় আমার একান্ত প্রয়োজন ।
জানি তুমি মনে মনে বলছ - চিৎকার করার জো নেই বলে "স্বার্থপর",
তুমি কি নও তা ?
তবে তুমি তোমার ঐ ঊনিশ কুড়ি বয়সগুলিতে
আমায় কেন ঠেলে দিলে উদ্দামের পালের তলে ?
গুছিয়ে নিলে নিজে নিজেকে আপন মনে খেয়াল খুশীতে,
ভাসিয়ে কি দিলে না আমায় ? পারতে না কি আটকাতে ?
তাহলে অবশ্য আজ এই যৌবনের শেষ প্রান্তে
লাবন্য থাকত না দেহে আর ওই গালের টুল,
সপ্তাহান্তের সান্ধ্য জলসায় দেখত না কেউ তোমাকে ।
হয়তবা কটা ছেলেপুলে নিয়ে, চোখে ভারী চশমা এটে
জানালার ধারে বসে দেখতে আকাশ উদাস হয়ে ।
সে যাকগে ; গুঞ্জন , তুমি শুনতে পাচ্ছ ?
আমার এ আকুলতা, যে ব্যথা বুকে চেপে আকাশ থেকে
নেমে এসেছি ব্যর্থ হয়ে মহাজাগতিক শক্তি ছেড়ে !
আমি তোমাকে ভালবাসি,
ভালবাসি তোমার হাসি,
তোমার হাসির বেলায় বসে যাওয়া
গালের ওই টুল খানি ।
আমি তোমাকে ভালবাসি,
ভালবাসি তোমার হাসি,
তোমার হাসির বেলায় বসে যাওয়া
গালের ওই টুল খানি...।।