হ্যাগো ! তুমি কি ঘুমিয়ে পরেছো ?
শোননা, আমার না ঘুম আসছে না একদম,
সেই কখন থেকে শুয়ে আছি তোমার পাশে
রাতটা যে কেটে যাচ্ছে একগুঁয়ে একপেশে
তোমার কি মনে নেই একটুও
আজকে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী প্রথম ?
আরে শোনই না, ওই যে দুরে ডাকছে কোকিল
ভরা বসন্ত বুঝি বাইরের আকাশে বাতাসে
চাঁদটা জ্যোৎস্না রঙে রাঙাচ্ছে ক্যানভাসে
যে রাতের অবিস্মৃত স্মৃতিটুকু
আমাকে তোমার করার আনন্দ দিয়েছে অনাবিল ।
মনে পরে ! সেই যে নিরানব্বইয়ের শুক্লা পঞ্চমীতে
আমার প্রথম শাড়ী পরার দিনে পুজো মন্ডপে
দেখে তুমি হেসেই খুন হয়েছিলে চুপে চুপে
প্যাঁচ লেগে ক'বার পরে গিয়েও
বান্ধবীদের সাথে আমি হাঁটছিলাম নিলাম্বরী শাড়ীতে ।
বছর পাঁচেক আগে শরতের স্নিগ্ধ সুবিমল প্রভাতে
মহালয়ার প্রভাতফেরীতে তবলায় তুমি ছিলে সাথে
আমি লাজে ভয়ে জড়সড় হলেও
আগমনী সবার সাথে গেয়েছিলেম  হেঁড়ে গলাতে ।
আর ঐ গেল বছরের আগের চৈতে দোলপূর্ণিমা প্রাতে
কি দুঃসাহস করে দাদার সামনে রং দিলে মুখে
কি অদম্য উচ্ছাস ছিল তোমার সে রাঙা চোখে !
আমি তোমার বাগদত্তা হয়েও
নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেম নির্দিষ্ট নিরাপদ দুরত্বে ।
হ্যাগো, শোননা, তুমি কি ঘুমিয়ে পরেছো ?
তুমি কি শুনতে পাচ্ছ , ধামালী গাইছে ওই পাড়াতে
গতবছর কি ধুমধাম সরগরম ছিল এমন রাতে
রাত বারটায় বসলেম যখন বিয়ের পিঁড়িতে !
আমার একান্ত অনিচ্ছাসত্বেও
জড়িয়ে আমায় ধরেছিলে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ।
ধুত্তোর ছাই, তুমি তো দেখছি ঘুমিয়েই পরেছো
ঘুৎ ঘুৎ নাক ডাকছো বেদম
অথচ কিছুদিন আগেও আমায় কথা দিয়েছিলে
বিবাহ বার্ষিকীর রাতে নিয়ে যাবে 'শঙ্খচিলে'
চাইনিজ না খাওয়ালেও
খাবো দুজন রোষ্ট বিরানী আনন্দে চরম ।
এ কদিনেই তুমি কেমন চুপসে গেলে নেশার বোঁদে
গা তাতে না এখন তোমার চৈত্রের খড়া রোদে,
আমি কিন্তু প্রতি রাতে এখনো চাঁদকে বলি চুপে চুপে
এসো তুমি আমার ঘরে যাও দিয়ে যাও জ্যোত্স্না চেপে
শেষ বসন্ত এখনো অনেক দুরে অনেক কিছু বাকি
আজকে শুধু আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী ।।