বিষন্ন বদন লয়ে দীনু পিসা হনহনিয়ে
নিরন্ন উদর বয়ে পানু পিসী সঙ্গে লয়ে
      ঘরে ফিরে উদোম গায়ে
       বাড়ান্দার জলচকিতে
       পা ছড়িয়ে হাফ্ ছেড়ে
       শুরু করলেন বকিতে
পানু পিসী চুপ চাপ জল দিয়ে যায় ঘটিতে
পান সাজাতে বসেন গিয়ে বাটা নিয়ে মেঝেতে ।
    উচ্ছন্ন ছেলের দায়ে অশ্রু ঝরে অঝোরে
কি করা যায় পায় না ভেবে হাতরাচ্ছে অন্ধকারে
         হঠাৎ ভীষন শব্দ করে
         দীনু পিসা বাড়ান্দায়
         পরে গেলেন সজোরে
         পানু পিসী অসহায়
চিৎকারে আশে পাশের লোকজন ছুটে আসে
চোখে মুখে জলের ছিটায় চোখ খুলে শেষে ।
মতি গতি ঠেকছে না ভাল কারোর চোখে
ছেলে বুজি পাগল হবে ভালবাসার শোকে
         রাত দুপুরে পিসা-পিসী
           যুক্তি করে নীরবে
         ছেলে করল বিদেশী
           ছি ছি করল সবে
হাজার হোক ছেলে আমার বেঁচে তো আছে
এই শান্তিতে বাবা মায় মরে বেঁচে আছে ।
  উচ্ছন্ন ছেলে তার হাল গিরস্থী ছেড়ে
সুখে দুখে দিন কাটায় দেশ দেশান্তরে
         ভর দুপুরের প্রখর রোদে
           গামছাতে ঘাম মুছে
         গভীর প্রেমের আহ্লাদে
          জাতিভেদ রয় পিছে
  কৃষ্ণ আল্লাহ্ এক হয়ে চরম সুখের প্রান্তরে
জন্ম দিলেন ফুট ফুটে এক  কোমল শিশু পুত্ররে ।
  ছেলে শুধায় মাগো আমার মামার বাড়ি কই
   বাপকে বলে বাবা তোমার বাবা বুজি নাই
        বুকে টেনে চোখের জলে
           আবেগ ভরা সুরে
        জবাব দেয় দুজন মিলে
          সবাই আছেন দুরে
দীর্ঘশ্বাস ফেলে শিশু নিষ্পাপ মনে জিজ্ঞাসে
স্বজন হারা হলেম আমি বল না মা কি দোষে ।
নীরব চোখের জল মেঝেতে খায় গড়াগড়ি
কি দোষ খূঁজে পায় না তারা প্রশ্নের ছড়াছড়ি
        মানুষ মানুষে যদি
        এত বিভেদ তবে
        সৃজিলেন কেন বিধি
        এক করে সবে
এক যূগ সংসার করি বুজিল না বিভেদ
সম্প্রদায়ের দেয়াল টেনে মিছে ভেদাভেদ ।
পানু পিশী দীনু পিশা মুঠো ফোনে হারায় দিশা
রক্তের টানে উতল হয়ে কাছে টেনে জুড়ায় তৃষা
         সমাজ সংস্কার কালের চাকায়
          হয়না বদল আচ্ছন্নতা
         কুসংস্কারের সালিশ ডাকায়
          ত্যাগ করে স্পৃশ্যতা
বাঁশের বেড়ার ফাঁক ফোকরে সমাজ দেখে উন্মুলতা
হাসি খুশী শিশুর কথায় অন্তরালে হাসেন বিধাতা ।।