বেদ পুরানের দেব দেবী নয়, নয়কো চমৎকার
শকুন্তলা আজকের প্রৌঢ়া নারী , মোদের অহঙ্কার ;
শকুন্তলা লক্ষ তারার মহাশূন্যের নয়কো ঝরা
হঠাৎ খসে ছিটকে পড়া আকাশ পথের উল্কা তারা ;
এই পৃথিবীর দুঃখ ভরা হিংসা বিদ্বেষ গ্লানি জড়া
বুকে লয়ে পিতৃ হারা ধরার আলো পেলেন যারা,
তাদের মধ্যে তাদের মতোই অসাহায়া স্বামীহারা ।


মায়ের ভ্রূনে ছেলের স্বপ্নে মেয়ে হয়ে কলঙ্কিনী
অবহেলা যাতনা সয়ে বাড়ছিল সে সৌদামনী ;
পাটের ক্ষেতে দখিন হাওয়ার আবেশ দোলে নাচে
নীল গগনে মেঘের ছায় লুকোচুরির ক্যানভাসে,
রিনিঝিনি মধুর ঝংকার প্রজাপতির পায় বাজে
কিঙ্কিণী পায় সারা গায় ঘুড়ে বেড়ায় উল্লাসে  
ফুল্ল দেহের  ফুলেল সৌরভ স্তব্দ আঙিনার মাঝে ।


শকুন্তলা, সাত পাকে বাঁধা কৃতীর স্মৃতি বুকে  
বই খাতা কাগজ কলম গোপন সঙ্গী রাখে,
নিঝুম রাতের ক্লান্ত দেহের সদ্য যৌবনা
কোজাগরী রাত সাক্ষী রাখে স্বপ্ন বীরাঙ্গনা ,
পিদিম জ্বালে চাঁদের কনার জ্যোৎস্না টেনে ঘরে
উদর জ্বালার অভাব ঢাকে জলে পেট ভরে,
এমনি করেই দিনে দিনে তার ইতিহাস গড়ে ।


শকুন্তলা, আজ চশমা এঁটে সলাজ চোখে
গায়ের পথে হাটে, জ্ঞান ফুটে তার চোখে মুখে
আনন্দে বুক ফাটে, হাজার শিশুর কথা ফুটায়
শিক্ষিকা সাজে, সরকার তারে পুরষ্কার দেয়
স্বীকৃতি ভাল কাজে, শকুন্তলা আজও রাতে
জানালার পাশে, সঙ্গী খুঁজে শুন্য বিছানাতে,
চাঁদের আলো আলিঙ্গন দেয় সার্থক দিনান্তে ।