নাজির বাড়ি কাজীর বাড়ি হাজীর বাড়ি পেরিয়ে
আড়ং ধরে দুধ পুকুরের পশ্চিম পাড় দিয়ে
জোড় পুকুরের পদ্ম পানায় পানকৌড়ি দেখে
শাপলা শালুক ভরা মাঠের ধার ঘেঁষে ঘেঁষে
যেথায় গ্রামের শেষ গোপাটের তেঁতুল তলা পরে,
লাল ফিতাতে তেলে ভেজা চুলের ঝুটি বেঁধে
একপাড়ে শাড়ী পরে সারা দেহ ঢেকে,
নাকে লম্বা নোলক পরে পায়ে নূপুর দিয়ে
বন্ধু আমার বসে আছে পথ পানে চেয়ে ।
কত ডিঙ্গি বয়ে যায় পাল তোলে বাতাসে
মাঝি গায় ভাটিয়ালী বৈঠা হাতে আবেশে
সারিঙ্গা সারি বেঁধে ঢেউ তোলে স্থির জলে
জারি গায় সুরে সুরে ঢেউয়ের তালে তালে,
দল বেধেঁ হংসীরা ঐ শামুক খায় ডুবিয়ে
পালে পালে বালি হাঁস ভাসে স্রোত বেয়ে,
সুর্য্য উঠে সোনা রোদে ডুবে সিঁদুর রঙে
বন্ধু আমার বসে আছে পথ পানে চেয়ে ।
চারিদিক নিঝুম যখন খাঁ খাঁ দুপুর রোদ্দুরে
বিলের জলে ভাসায় ভেলা দামালরা ঐ দুরে,
ঝোপের কোনে কানি বক এক পায়ে ঠাঁয় দাড়িয়ে
পায় না দেখা চুনো পুটির ব্যাঙ যায় লাফিয়ে,
ডাহুক ডাকে এক টানা হিজল ডালে বসে
দলছুট কচুরী পানা ছুটছে স্রোতে ভেসে,
জোয়ার জলের ছোঁয়া লাগে রোজ তার পায়ে
বন্ধু আমার বসে আছে পথ পানে চেয়ে ।
আমার যাওয়া হয়না যে আর ট্রাম বাস চড়ে
এরোপ্লেনের দামী টিকিট কেনা সাধ্যের বাইড়ে,
ইট পাথড়ের দেয়াল ঘেঁষে নিত্য চলা ফেরা
কালো ধোঁয়ায় নিয়ত স্মৃতিরা যায় মারা,
রাত দুপুরের কোলাহলে ঘুম যখন যায় ভেঙ্গে
আমার আবার মনে পরে,
বন্ধু আমার বসে আছে পথ পানে চেয়ে ।