"এবার তুমি থামাওছেন তোমার এই মাতালের চৈতপরব
কাইল বাদে পরশু পোলাডার পরীক্ষা, পড়তাছে নীরব"
-অঘ্রাণের এই শীতল সন্ধ্যায় বাইড়ের ঊনুন হাড়িতে
লক্ষনের মা চাল দিচ্ছে আর মাতাল বাপকে গাল দিচ্ছে ;
ভাঙ্গা চৌকির মচমচ তালে দোলে দোলে লক্ষন
সুর এবার চড়িয়েছে,'বায়ূ বয় শন্  শন্ ...'


লক্ষন জানে তার বাবা ঘুড়ে ফিরে সারাদিন
না পেয়ে কাজের সন্ধান নেশায় বাড়াচ্ছে ঋণ,
তাই সে তারাতারি পাঠ চুকাচ্ছে......।
যতক্ষনে বাবা-মায়ের হাতাহাতি না শুরু হচ্ছে ;
প্রায়শঃই মা যখন বাবার শক্ত হাতের কিল খেয়ে
গোঙাতে গোঙাতে ঘুমিয়ে পরে উপোষ পেটে,
বাবা তার বাতি নেভায় তাকায় না ফিরে
ছেলেটার কি চাই (!) খাবে না পড়বে ;
আবার এক সময় রাতে যখন ঘুম ভাঙ্গে ক্ষুদায়
লক্ষন টের পায় ওরা' মগ্ন এখন গভীর ভালবাসায় ।


এভাবেই ন'বছরের রোজনামচায় লক্ষন বাড়ে স্বপ্ন বাড়ায়
একদিন ডাক্তার নয়তো মাষ্টার নিশ্চয় হবে সে লেখা পড়ায়,
সেদিন সে আর মায়ের সাথে কাটবে না বিড়ি পাতা
দেবেনা বাবাকে কাজে যেতে - ঋণ করে নেশা খেতে ;


ওদিকে ধাপ্পুর ধুপ্পুর শোনা যাচ্ছে ঘরের দাওয়ায়
লক্ষন সুর চড়ায়, ' আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে - এই বাংলায়" ।