পঁচিশ বসন্তের পুরনো গোলাপটা সেদিন আমার গলা চেপে ধরেছিল অকস্মাৎ।
আমি কেন ওটাকে কষ্ট দিয়েছি,কেন কেড়ে নিয়েছি আহার- নিদ্রা,কেন ভেঙে টুকরো টুকরো করেছি তার পরম সুখের একমুঠো স্বপ্ন.....
কিংকর্তব্যবিমূঢ় আমাকে ওটা এভাবেই আক্রমণ করছিল শত প্রশ্নের ত্রিশুল বানে।
আমি স্তম্ভিত, আমি হতবাক,হারিয়ে ফেলেছি কথা বলার খেই....


তখন কত হবে..!!
তুমি সবে নবম আর আমি সদ্য একাদশে।
তোমার বাসায় রাখা আমার কলেজ ডায়েরীতে কখন গুঁজে দিয়েছিলে একটি গোলাপ আর ডায়েরীর পাতায় আনাড়ি হাতের আঁকা ভালোবাসার চিহ্ন,একটা তীক্ষ্ণ তীর এফোঁড় ওফোঁড় করেছিল তার ঠিক মাঝ বরাবর আর তার ভিতরে আঁকা ছিল অসংখ্য প্রশ্নবোধক চিহ্ন.....


তোমার এহেন মায়াবী প্রেমার্ঘ আমাকে সেদিন হিলিয়ামে পরিণত করেছিল।
আমি মেঘের পালকে উড়ে উড়ে সুখ স্বপ্ন দেখেছি অবিরত।
নিখাদ প্রেমের উন্মুক্ত আকাশে তুমুল উড়িয়েছি ভালোবাসার শুভ্র কপোত।
বিমূর্ত তোমার ভাবনায় নিশাচর সেজেছি কত।
মৌন আর্তনাদে অতিক্রম করেছি কার্তিকের অসংখ্য দিঘল রাত্রি।
তবুও মিলাতে পারিনি জীবনের হিসেব......


তুমি যখন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা ইউনিভার্সিটির মেধাবী ছাত্রী তখন জীবনের তাগিদে আমি লেফট-রাইট করি চট্টগ্রাম সেনানিবাসের প্রাচীর বেষ্টিত কোন এক প্যারেড গ্রাউন্ডে।


ভুল বুঝনা মৌমিতা,ভেবনা উপেক্ষা করেছি।
শুধু ইচ্ছে করেই বাউণ্ডুলে এই ছন্নছাড়াটার কালো হাত থেকে তোমাকে নিরাপদ দূরত্বে রেখেছি মাত্র।
অন্তরাকাশের বর্ষিত নোনা জলে স্নান করিয়েছি আপাদমস্তক তবুও রোধ করিনি তোমার অগ্রযাত্রার সুমসৃণ পথ।
তুমি আজ বি সি এস ক্যাডার,আর আমি.....হা..হা..হা....


মৌ,তোমাকে আমি হারাইনি মোটেও,বরং তোমাকে সঞ্চয়ে রেখেছি অন্তঃপুরে।
আজও আমার দুর্বিনীত চোখ অতন্দ্র প্রহরারত তোমার জীবনের সুবিন্যস্ত রাজপথে।
আজও অক্ষত-অটুট,হৃৎপিন্ডের ক্ষরিত রুধিরে সিক্ত তোমার উপহার, পঁচিশ বসন্তের সেই জীবন্ত গোলাপ।
----------------++++++++++----------------