বরফে ভর্তি স্ফটিকের গ্লাস দেখেছ নিশ্চয়?
ভিতরে বরফ অথচ বাহিরে কি জবজবে ঘাম,দর দর করে কাঁচের দেয়াল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে জমিনে।দেখনি কখনো?
ওসব ঘাম নয়গো,ওসব হচ্ছে পিপাসিত বাতাসের আত্মবিলাপ,যে সামান্য আশ্রয় খুঁজতে এসে আত্মসমর্পন করে,অস্তিত্ব হারিয়ে পরিণত হয়েছে বঞ্চিত সলিলে।


গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহে যখন পুড়ে খাঁ খাঁ হয়ে যায় শান্ত প্রকৃতি,
মাতাল চৈতালী হাওয়া যখন ছুটে চলে দিগ্বিদিক, খুঁজে ফেরে শীতলতার একবিন্দু অভয়াশ্রম।
ঠিক তখনি হৃদয়হীনা বরফ শিকার করে অসহায় তৃষিত বাতাসের কূল,মান ও সম্ভ্রম।


কস্তূরী, আমিওতো তেমনি ছিলাম অসহায় জীর্ণ প্রাণ এক।
বিলাসী বসুধার সীমাহীন অনাদর আর উপেক্ষার যন্ত্রণা সইতে না পেরে অথৈ সাগরে ভাসছিলাম অতিষ্ঠ আমি।
জীবন সায়াহ্নে এসে তোমার হৃদয় নগরে নোঙর করেছিলাম আমার ভালোবাসার জীর্ণ সাম্পান।
এতোটুকু সুখ নেবো বলে।
আমি সমস্ত বঞ্চনা ভুলে শান্তির স্বর্গ খুঁজেছিলাম তোমার নীলাভ একজোড়া  চোখে।


অথচ তুমি?
তোমার সুচতুর প্রেমের প্রলেপে আমাকে ময়ূর বানিয়েছ।
আমাকে প্রণয়ের স্বর্গীয় সুখ আস্বাদন করাবে বলে দিন,ক্ষণ, কাল গুণিয়েছ।
অবশেষে সম্বাব্য বৃষ্টির এক মেঘলা অপরাহ্ণে আমাকে পেখম উঁচিয়ে নাচিয়েছ।
আমার কামনাকে পুঁজি করে উপস্থিত দর্শকের কাছে হাসির খোরাকে পরিণত করেছ এই আমকে।


অথচ তোমার এক পশলা হাসির জন্য আমি প্রাণপণে নেচেছি কস্তূরী।
শেষাঙ্কে আমার বুনিয়াদকে গর্ভে ধারণ করার মিথ্যে প্রহসনে আমার পুচ্ছ ঠুকরিয়ে রক্তাক্ত করেছ তোমার তীক্ষ্ণ ঠোঁটে।
হায়!তোমার সাথে সংগমসুখ এ জীবনে আর হলোনা।


আমার অনন্ত কালের বুভুক্ষ প্রেম অদ্যাবধি তোমার আত্মা স্পর্শ করতে পারেনি।
অতিক্রম করতে পারেনি হৃদপিন্ডের বেড়িবাঁধ।
আজ আমার ভালোবাসা জল হয়ে নিম্নে গড়ায়।
আর তোমার ছলনার শেষ টুকরো বরফটাও আজ গলে জল হয়ে জমে আছে গ্লাসের তলায়।
-------------++++++++++--------------