ছড়া


জাহিদ হোসেন রনজু
-------------------------------------®


মন ভুলায়ে ঘুম পাড়াতে
হাজার বছর আগে,
ছন্দ বেধে তালে তালে
মনের কুসুম বাগে
উঠতো যে সুর গুনগুনিয়ে
দে দুল দে দুল তালে,
মা-দিদিমার মুখে মুখে
চলতো কালে কালে।
নানান দেশে নানান ঢঙে
নানান রূপে হাসে,
আবেশমাখা আদর যেন
সেই সুরেতে ভাসে।
নাছোড়বান্দা খোকাখুকু
শুয়ে মায়ের কোলে,
সে সুরেরই ছন্দে দুলে
পড়ে ঘুমে ঢলে।


বর্গী যখন দেশে এলো
ফসল নিলো লুটে,
সহজ সরল সুরগুলো সব
নতুন রাগে ফুটে।
সুরে তখন লাগলো যেন
লু হাওয়ারই ছোঁয়া,
সহজ সরল ভাবখানা তার
গেল যেন খোঁয়া।
ভয় জাগানো আশংকা আর
অত্যাচারের কথা,
বলতে যেয়ে সে সুর আনে
ব্যঙ্গ রসিকতা।
ভয় তাড়ানো জাগরণী
মন্ত্র বুকে নিয়ে,
সে সুর যেন উঠলো ফুঁসে
গায়ে ঝাড়া দিয়ে।


রইল না আর সাদামাটা
শব্দ মধুর ঝংকার,
অসুর নাশে এলো নতুন
সুরেতে ঝাল লংকার।
থাকলো না সুর শিশুর পড়ায়
জড়ায় নতুন দ্বন্দ্বে,
উঠলো ফুঁসে টগবগিয়ে
বারুদেরই গন্ধে।
মারছে চাবুক আজকে সে সুর
অসঙ্গতির মুখে,
বুঝছে মানুষ, লাগছে আঘাত
অপরাধীর বুকে।
যুগে যুগে এমন করেই
যে সুর হলো গড়া,
ছন্দে দুলে যায় ছুটে যায়
তাকেই বলে ছড়া।


-------------------------------------
৭ অক্টোবর ২০১৮, মিরপুর, ঢাকা।