লঞ্চ যাত্রা


জাহিদ হোসেন রনজু
----------------------------®


যায় বয়ে তটিনী
                   দূর থেকে সুদূরে,
সেই বুকে ভেসেছি
                 জৈষ্ঠ্যের এ দুপুরে।
বাঁশীটা বাজায়ে
                  ছোট এই জলযান,
জল কেটে যায় ধেয়ে,
                  শুনি তার কলতান।
যেদিকেই চাই দেখি
                        সবুজের বৃত্ত,
জুড়ায়ে যায় আঁখি
                       ভরে মন চিত্ত।
গোলাকার চারিধার
                      যেদিকেই দৃষ্টি,
অনিন্দ্য সুন্দর
                       অপরূপ সৃষ্টি।
মৃদু ধীর বাতাসে
                   তুলে ঢেউ লহরী,
রোদ গায়ে ঝিলিমিল
                   যেন জল-ময়ূরী।
ঝাঁক বেধে বলাকা
                উড়ে যায় আকাশে,
অন্ন, নীড় খোঁজে
                ছুটে কোন সকাশে?
এদিকে ওদিকে
                     অসংখ্য তরণী,
যাচ্ছে ঢেউ তুলে
                        ব্যস্ত হরিণী।
শ'খানেক নর-নারী
                         লঞ্চে যাত্রী,
আছে এক ফুটফুটে
                    লাজরাঙা পাত্রী।
টুকটুকে লাল পেড়ে
               শাড়ী পড়ে ঘোমটায়,
নিরবে কেঁদে যায়
                 অজানা আশংকায়।
তটিনীর স্রোতসম
                  জীবনের গতিতে,
যাচ্ছে কূল ছেড়ে
                  নব এক দিঠিতে।
চিন্ জানা যে নীড়ে
                 ছিল সে এতকাল,
ছেড়ে তা কাঁদে মন
              করে দেয় বেসামাল।
চলমান জলযান
                    শুনে না ক্রন্দন,
আপনার গতিতে
                ছুটে যায় সারাক্ষণ।
প্রয়োজন যেখানে
                   নেয় শুধু বিরতি,
পুরাতন কেউ নামে,
                   নেয় নব অতিথি।
জীবনের এই নিয়ম
             কেউ আসে কেহ যায়,
ক্ষণিকের বিরতি
                জলযান ফের ধায়।
কে এলো কেবা যায়
              নেই জানা প্রয়োজন,
বিনিময় দর নিয়ে
              পারাপার আয়োজন।
সারাটি দিন শেষে
              যবে লাল নীলাকাশ,
হয় ইতি পথ চলা
             নেই থাকার অবকাশ।
ধীর লয়ে যাই নেমে
               ছেড়ে তাই জলযান,
এভাবেই যাত্রা
               দিন শেষে অবসান।


প্রকৃতির প্রয়োজন
                     যখনই ফুরাবে,
জীবনের যাত্রা
                 হবে শেষ এভাবে।


-----------------------------
৩০ মে, ২০১৮, কয়রা, খুলনা।