"মোহন বাঁশি"
               জাহিরুল মিলন


কে শুনিবে মুগ্ধভাবে
পাশে বসে মোর মোহন বাঁশি?
কে বলিবে মধুর স্বরে
আমি তোমায় ভালবাসি?


মৃত্যু-রথে অসীন তুমি
ছাড়ি গেলে এই ইলা,
কবর রচিতে গিয়েছিনু আমি
সেদিন গোধূলি বেলা।


একদা তুমি এসেছিনু
আমার এই একাকী জীবনে,
সবচে আপন ছিলে তুমি
আমার আপন ভুবনে।


কতযে অনুরাগী ছিলে তুমি
আমার প্রনয় গানে,
পথভ্রমে তুমি এসেছিলে ছুটে
আমার বাঁশির তানে।


সেদিন বাঁশি মোর কোন ইন্দ্রতে
তুলেছিল এক মায়াবী ঝংকার,
সাহসা তুমি বসিলে পাশে
নিলে কাড়ি  বাঁশি আমার।


কোন সে ভয়ে ভীত আমি
চাহিনু তব পানে,
অবাক বিস্ময়ে ছিনু চেয়ে
বুঝিনি তার মানে।


ভয়টা আমার দিলে ভেংগে
সামনে মুচকি হেসে,
হাসিতো নয় প্রণয় বান
ফেলিনু ভালোবেসে।


অতঃপর তুমি প্রতিদিন
আসতে মম বাঁশির তানে,
কাঁধে রেখে বাহুদ্বয়
বসতে ঠিক এইখানে।


ভালোবেসে বাঁশির তানে
আসতে রোজ এই কদমতলায়,
বাঁশির সুরে তাল মিলিয়ে
বহিতো তখন প্রেমের মলয়।


সুখ যে মোর সহিলোনা বেশি
ভাঙিলো হৃদয়; পুড়িলো কপাল,
সব হারালো জীবন থেকে
হারালো মোর সোনালি সকাল।


দৈবাৎ তুমি গেলে হারিয়ে
ধরনীর আঁচল ছেড়ে,
রহিলোনা আর কিছুই আমার
সবি বিধি নিলো কেড়ে।


হৃদয় মোর ভরিলো বেদনায়
আমি যেন আর নেই আমারে,
ভাসিলো নয়ন জানিলাম যখন
আশিবিষে কাটিয়াছে তোমারে।


সেদিনের যন্ত্রণাকাতর ছবি
আজো ভাসে মোর নয়নে,
বলেছিলে কোলে মাথা রেখে
ক্ষমা করো মোরে; রাখিওনা আর মনে।


তব সে কথা পারিনি ভুলিতে
আছে বিধে এই বুকে,
আসতে যদি তুমি একবার
দেখতে আছি আমি কত সুখে।


ভিখারির বেশে আজ
আমি ঘুরি পথে পথে,
বাঁশি আর তোলেনা সুর
তবু থাকে সে মোর সাথে।


সারাদিনের ক্লান্তি শেষে লোকে
শান্তির তরে খোঁজে নিমীলন,
আমার নয়নে আসেনা তন্দ্রা
ভাবি; যদি তুমি আসো এখন।


সমগ্র রজনী থাকি একাকী
তবু আসোনা তুমি,
একদিন তুমি আসবেই ফিরে
এই ভেবে দিন পার করি আমি।


একদিন হয়তো তোমার কাছে
আমিও আসবো চলে,
থাকবেনা কোন বাধা আর
আসবো সব পায়ে দলে।


থাকবে কাছে তোমার প্রিয়
সেই মন ভোলানো মোহন বাঁশি।
আবারো তুমি বসবে পাশে
বলবে তোমায় ভালবাসি।