আপনাদের কে বলছি শুনুন,
আমি লাশ দিয়ে একটি লাবণ্যময় কবিতা
লিখতে চাই। দুয়েকবার যে
মহাকাব্যের কথা ভাবি নি তা নয়। কিন্তু নিজের কবিত্বের
দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-ক্ষেত্রফলের পরিমাপ করতে
গিয়ে সাহসে কুলোয় নি। তাই আপাতত লাশ দিয়ে
পয়ার বা মহাপয়ার ধাঁচের; নিদেনপক্ষে ছন্দ বিবর্জিত একটি উত্তরাধুনিক নির্মেদ কবিতা হলেও, লিখতে চাই।


তাই,
ইদানিং আমি কবিতার মালমসলা অর্থাৎ
লাশ সংগ্রহে ব্যতিব্যস্ত। ইতিমধ্যেই আমার সংগ্রহে
লাশের অনুসৃত অলঙ্কারের বেশ
সমৃদ্ধ একটি মজুদ গড়ে উঠেছে। দৈনন্দিন
অনিবার্য লাশ থেকে আমি আমার প্রয়োজন মতো
নোটবুকে টুকে নিচ্ছি রক্তাক্ত অনুপ্রাস, বুলেটবিদ্ধ উপমা,
প্রেট্রোল বোমায় ঝলসানো উৎপ্রেক্ষার
সংশয়জাত সৌন্দর্য। ভাবছি জলডুবি ফুসফুস দিয়ে
নেব অসংগতি অলঙ্কারের অনুষঙ্গ। চাপাতি দিয়ে কোপানো বিজ্ঞান মনষ্ক লাশ দিয়ে দেব দুর্দান্ত অন্তমিল।


আমার মজুদ, হরমোন ইনজেকশান দেয়া
আসন্ন কোরবানির গরুর মতো
বেশ স্বাস্থবতী হয়ে উঠছে দিনকে দিন। আপনাদেরকে
বলেই দিই কিছু নমুনা। ব্লগার লাশ,
ধর্মনিরপেক্ষ লাশ, প্রগতিশীল লাশ, রাজনৈতিক
লাশ, গায়েবানা লাশ, হেফাজতি লাশ এমনকি আত্মহত্যাপ্রবণ
ব্যর্থ প্রেমিক লাশও জমেছে
আমার নোটবুকে। দরবেশ লাশ, পরহেজগার লাশ,
ওহাবি লাশ, সুফি লাশ,
মৌলবাদী লাশের ধুসর রকমফের পাবেন আমার নোটবুকের
তারকা চিহ্নিত প্রতিটি অলিগলিতে । শহীদি
পদকপ্রাপ্ত লাশও আছে শুমারহীন। নাস্তিক
লাশেরও কমতি নেই খুব।
ভাবছি, রোজগার বন্ধ হওয়া শ্রমজীবী প্রান্তিক অর্ধমৃত
লাশও নেব মগ্নচৈতন্যজাত জমাট পরাবাস্তব
চিত্রকল্প নির্মাণের খাতিরে। তাতে বেশ বিউটি পার্লারে রং করা রমণীয় বৈচিত্র আসবে ষোড়শী কাব্য শরীরে।


পদাবলী লেখার মতো লাশ কি জমেছে ভাগাড়ে ?