ছোট্ট বেলায় একটি পশু জাতের
গরু ছানা নামের বকনা বাছুর।
আমারই চাচাতো প্রিয় নানা ভাই
কেরামত আলী মোল্লা নামের বেজাই
ভারী যে সেই মৃদু হাসির মানুষটি ছিলেন।


আমাকে জানতেন তিনি অনেক ভাল
বাসতেন ভাল মন হতেই আপন জেনে।
তাই তো নিয়ে ছিলাম নানা ভাইয়ের
নিকট হতে ভাল জাতের একটি বকনা
গরুর ছানা উনার পালের বলে।।


ঐ বকনা ছানাটি দেখতে ছিল
বেজায় ভারী সতেজ গড়নের।
ঐ'গরু ছানা'টির বয়স তখন এক
বৎসরের, আমিও ছোট্ট বয়সের
বয়স ছয় কি সাত ঐ সেই চেতনাতে।


যতই দিন যেতে থাকে আর ততোই
হতে থাকে ভারী গড়নের শরীরের
দেহটি'তে আপন মনেই বেড়ে ওঠে
প্রাকৃতিক নিয়মেই অপরুপের তরে।


গাঁয়ের রঙ'টিও যেমন চমৎকার
তেমনিই ভারী দৃষ্টি নন্দনের এক
কত যে ভালবাসা রয়ে ছিল ঐ'
সেই নানা বাড়ির বকনা বাছুরটিতে।


ঐ একই গোয়ালটিতে আরো ছিল
কয়েকটি গরু ও বাছুর ছানা!
সেই বকনা বাছুর ছানাটির সহিত
আপন মনে আত্মীয়ের মতনই;


করতো বসবাস, ছিল না কোনই
পরবাস। চার-পাঁচটি গরু থাকতো
ঐ গোঁয়াল ঘরটি'তে। গোঁয়াল ঘর'টি
ছিল বাঁশ-কাঁঠ-ছন-খড়-কুটার ছাউনির।


ঐ গোঁয়াল ঘরে হঠাৎ একদিন সন্ধ‍্যা
রাতে প্রাণ প্রিয় নানীজান আমার যান
আগলা প্রজ্বলিত চেরাগ বাতি নিয়ে
ঘরটির আড়াতে ছিল রাখা দাহ্য জাতদ্রব‍্য;


শুকনা ছোঁনের খড়কুঠা ও গবরের শুকনো
লাঠি ঝুলানো, সেই হতেই আগুনের সূত্রপাত
নানীজানের একটি ভুল' ঐ দিকে ছনের ছাউনীর
গোঁয়াল ঘর; তার পর  ঘরটির ভিতরেও দাহ্য
জাতের দ্রব‍্যাদি।


দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে আগুনের বিভীশিখা
রোষানলের ধ্বংসের অপ্রীতম খেলায় মেতে
থাকা আগুন বিপদ সীমা অতিক্রমে গোঁয়াল
ঘরটির সাথে আগুনের রোষানলের স্বীকারে


পুঁড়ে যায় যে গোঁয়ালে থাকা গরুগুলিও
কি যে উপায় আগুনের প্রচন্ড তাপদাহে প্রায়
সব গুলি গরুই ঐ আগুনে পুড়ে ভষ্মিভূত হয়!
শুধু মাত্র একটি গরু যে গরুটি আমারই নামে


হয়েছিল আনা নানাভাই নামের গরু ছানাটি'
তেজ্য-বিজ্যে গর্জনের সর্বচ্চোশক্তি খাঁটায়ে
বাঁধা গলেতে রশি ছিঁড়ে কোন মতে পালায়ে প্রাণ
বাঁচায়ে ছিল নিজ ইচ্ছা শক্তিতে বিধাতার প্রাপ্তিতেই।


বেঁচে যাওয়া ঐ সেই একটি বকন ছানাটিই হয়
ঐ নানা-নানী পরিবারের ভরসা' বাকী গরুগুলির
হারানোর শোক আহাজারী কষ্টের উপশমের সম্বল
নানীজান আমার কি যে হয়েছিল পাগলের ন্যায়ে
প্রাণহারাতে বসে যায় যায় অবস্থার স্বীকারের।


ঐ আগুনের ঘর হতে নানীজান আমার বড় ঝুঁকি
নিয়ে গরুগুলি বেড় করতে গিয়ে হন গুরুত্বর আহত!
জীবন পণের বাঁজি রেখে করেছেন প্রচেষ্টা গরুগুলি
রক্ষায় হয়েছেন তিনি নিজেই ক্ষতি গ্রহস্থ হন চরম


আকারের দেহেতে বাম মুখের চওয়াল, কপাল,
নাকের ও মুখের আংশিক এবং বাম হাতের বাহু
হতে তালু পর্যন্ত যায় যে ঐ নিজ ভুলেরই ব্যবহার
জনিত আগলা বাতিরই রোষানলের অনলের স্বীকারে


পুঁড়ে ভষ্মিভূতের তরে। কি যে বেদনাতীত মর্মস্পর্শের
হৃদয় বিদারক ঘটনা; নেমে আসে ঐ সময়ে নানা
বাড়িটিতে হাহাকারের আর্তনাদের হৃদয়-ভাঙ্গা-খাঁন-
খাঁনের আহাজারী! ভাগ্যের সুপরিনতিতেই বেঁচে যায়
অন্যান্য ঘরসহ প্রতিবেশী বসবাসের বসত বাড়ি।


তাই তো বলি বিধাতা একদিকে যেমন পরীক্ষা করেন!
অন্য দিকে ঠিকই শান্তনার জোঁয়ারে রাখেন মন মানুষেরই!
আমরা মানুষগুলিই খাম-খেঁয়ালীর একজন' বিপদ ডেকে
আনতে বেজায় ভারী মনে হয়ে পড়ি আবেগের।


সেই তরেই হয়ে ক্ষতি অসহায়ে সহায়-সম্বল ফেলি হারায়ে
এখানেই "বকনা বাছুরের ইতি কথা (এক)" শেষ করলাম।
এই কবিতাটির বাকী অংশ পড়তে অনুরোধ জানালাম দুই'য়ে।
করোনা ভাইরাসের প্রার্দূভাবের কবল শেষ হতে না হতেই


শুরু হয়েছে আবার ব্লাক ফাঙ্গাস ছত্রাক রোগ ঐ আগুনে পুঁড়ে
ভষ্মিভূতের মতই রক্ষা পাওয়াই বড়ই দ্বায় ধ্বংস নীলা হতে।
সেই তরেই সকলেই সব সময় সকল কাজেই সাবধানতা
অবলম্বনে করলে কাজ-কর্ম রক্ষা পাবে নিজসহ অন্যান্যের;


নিরাপদ জীবন ও সঠিক মনের কামনা-বাসনায় ঐ সেই
তরে আর শুনতে হবে না; ঐ সময়ের আগলা বাতিরই
আগুনের সূত্রের গোঁয়াল ঘরসহ পুঁড়ে গরুগুলি মরার
মতন সেই একটি বিরল ঘটনা ঐ সময়ের একটি কৃষক
পরিবারের সহায় সম্বলের এক শূন‍্যের কুঠাতে রিক্তহস্ত
ঐ পরিবারের প্রতিটি মানুষের হ্নদয় খানাতে নেমে আসে
"বকনা বাছুরের ইতি কথা (এক)" নামের রচিত
কল্পকথা মালা যা একেক করে প্রকাশে মিলাবে জানাতে।
===×××===
===×××===
বাণী : কৃষক পরিবারের জীবনই চলে গরু, ছাগল, ফসল, হাঁস, মুরগী, ফল, মূল, লালন-পালনের মধ্য দিয়ে। আর ঐ কৃষি পরিবারের বউঝিসহ সকল ছেলে-মেয়েরাই অধিকাংশের একই মনের উল্লেখিত সব কিছুর সহিত ভাললাগা ও ভালবাসার প্রতি মহত্ব তৈরি হয়ে বসবাস করতে থাকে। সেই বসবাসে যদি কোন প্রকার ক্ষতি আসে তাদেরই নিজস্ব ভুলে, নিজকে যে আর ক্ষমা করতে পারেন না একজন বিবেচক মানুষ হিসেবে। সেই জন্যেই সকল মানুষকে সব সময় সাবধানতা অবলম্বন করে সকল কাজ-কর্মই করা শ্রেয় বটে।।