আমার টিয়া পাখি
মোঃ জাকির হোসেন জয়


আজকে হঠাৎ করে ফিরে গেনু হারিয়ে যাওয়া কৈশোরে,
প্রতিদিন এক কোটি মিলিমিটার পথ হেঁটে পাঠশালায় আসতে-যেতে সহজেই কি মন চাই তো রে!
তাইতো ঈশ্বর অতটুকুন বয়সে ভালো লাগার দানা বাঁধিয়ে দিয়েছিল অন্তরে,
দেখতে তোকে সবার আগে ছুটিতাম ও পথ ধরে, তুমি যেতে সবুজ কামিজের উপর কটি পরে।
কি মনোরম দৃশ্য আজও চোখে ভাসে!!!


পুরো পথ ধরে গল্প-গুজব করে যেতে যেতে দেখিতাম তোমায় বারে বারে আড়চোখে,
বিরতিতে তপ্ত দুপুরে খুঁজিতাম তোমায় আইসক্রিম খাওয়াতে, তুমি পালিয়ে যেতে আমায় দেখে।
দুরন্তপনায় গ্রামের সবার আগে নাম ছিল বটে,
কিন্তু তোমায় ভাল লাগার কথা আজও বলা হয়ে ওঠেনি অকপটে।


কত শত বার প্ল্যান করেছি খুলে বলবো মনের কথা তোমাকে,
হঠাৎ করে দু’হাজার সালে সবকিছু ছেড়ে বিদ্বান হতে শহরে পাড়ি দিতে হলো আমাকে।
সেই থেকে আজ অবধি দেখিনি দু’চোখ ভরে আমার প্রিয় টিয়া পাখিরে,
সেই বটেরতল, সেই খেয়াঘাট, সেই এক কোটি মিলিমিটার পথ বলো ভুলি কি করে?


এখন সংকোশ নদীর ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে হারিয়ে যাওয়া খেয়া ঘাটের কথা মনে পড়ে,
দুরন্ত কৈশোর কেটেছিল মোর এই নদীর জলে পা ফেলে ফেলে আজ খুব বেশি মনে পড়ে।
ঐদিকে ঐখানে শফিউর মাঝির নৌকা বাঁধা থাকতো তুমি উঠতে ধীর পায়ে,
প্রেমাসক্ত হয়ে কি এক মোহ মায়ায় আমি থাকতাম চেয়ে।


তুমি হারিয়ে যাওয়ার পরে গ্রামে আর থাকা হয়নি স্থায়ীভাবে,
জড়িয়ে পড়েছি আজ ব্যস্ত শহুরে জীবনে, সময় কেটে যাচ্ছে সেভাবে!
অব্যক্ত ভালবাসা হৃদয়ে ধিকিধিকি জ্বলে সেই যে লেগেছিল কবে কলিজায় দাগ,
সবকিছু ভুলে দু’হাত তুলে বলি, ‘যেখানেই থাকিস আমার টিয়া পাখিরে তুই সুখে থাক।’


**************************************************
রচনাকাল: ৩০/০৯/২০২০খ্রিঃ
১৫ আশ্বিন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১২ সফর ১৪৪২ হিজরি। কুমিল্লা।