আমার কবিতারা এখন আর আগের মতো ঘুমায় না
ঘুমাতে চায় না
আকাশ, মেঘ, বৃষ্টি, পাখির ডাক আর কবিরা
তাদের ঘুম নাকি কেড়ে নিয়েছে
কবিতারা আর আগের মতো মাথার ভিতর তুমুল পংক্তি
আওড়ায় না, উকিঝুকি মারে না
আমাকে দিয়ে কবিতা লেখানোর জন্য
তারা আর কথা শুনতে চায় না এখন, বড্ড জ্বালাতন করে
এখন তারা  
কখনো নদীর তীরে চলে যায়, বসে বসে স্রোতের টানে
ভেসে যাওয়া কচুড়ীর সাথে কথা বলে, দূরত্ব মাপে সাগরের  
সীমানা ডিঙ্গাতে চায় নদীর
আবার কখনো ঘুটে কুড়ানী বুড়ীর সাথে করে সখ্যতা
তুমুল আড্ডা মারে আর গল্প করে তার সাথে
নীলাকাশের উড়ে যাওয়া পেজা পেজা শুভ্র তুলার মতো
মেঘের সাথে ছুটে যায় গম্তব্যহীন ঠিকানায়
কখনো পাখিদের গানের আসরে বসে তুমুল আড্ডা মারে
আর গান শোনে, নৃত্য করে
বাগানে গিয়ে গায়ে ফুলের সৌরভ মাখে,পুকুর পাড়ে বসে
গৃহবধুর পানিতে ডুব দেয়া সাতার কাটা আর জল ভরা
কলসী কাঁখে বাড়ীর দিকে ছুটে যাওয়া চাক্ষুষ করে
গাছের ডালে বসে কখনো একঝাক পাখির অকস্মাৎ আকাশে
উড়ে যাওয়া অবলোকন করে
আর দৃকপাত করে শূন্য আকাশের দিকে


আমার কবিতারা আজ আর কথা শোনেনা, বড্ড বেয়াড়া এখন
তারা
কতো কি ই না করলাম তাদের জন্য, খাট, পালঙ্ক, দোলনা
গ্রীষ্মের পোশাক, গরমে আরামে থাকার জন্য এসি,শীতের
লেপ তোষক, কম্বল
কতো কি ই না দিলাম তাদের সুখের জন্য
তবুও আমার কবিতারা ঘুমাতে চায় না, কথা শোনেনা তারা
তারা মাথার মধ্যে ঢোল, তবলা, হারমোনিয়াম বাজায়
আর সারারাত হৈ হুল্লোড় হাঙ্গামা করে, সঙ্গীতের কোরাস করে
আর সারারাত জেগে থাকে তারা আর পাহারা দেয় তাদের
প্রিয় কবিকে, আর বলে হে কবি
তুমি-ই তো আমাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছো
আর ঘুমাবো না আমরা!