এমন কিছু কঠিন সময় আসে মানব জীবনে
চলার পথে এসে ভর করে মনের অজান্তেই
সম্ভাষণ জানাতে হয়না তাকে


যখন পৃথিবীর প্রিয়তম মানবকে ও আর কাছে
পায়না মানুষ
দিশাহীন নাবিকের মতো ছুটে চলে সমুদ্রের
বিশাল ঢেউয়ের তালে তালে
আঁধারে ঢেকে যায় গোটা পৃথিবী তার
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা সবি অকেজো হয়ে পড়ে তখন
হারিয়ে ফেলে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম


চোখ মুখ ঝাপসা হয়ে আসে তখন
সরষের ফুলে ঢেকে যায় চোখ
চারপাশে শুধুই অন্ধকার
ঝিঁঝি পোকার ডাকও আসে না আর কানে
অন্ধকূপ আর গহীন গুহার মতোই
অন্ধকার আঁকড়ে ধরে অক্টোপাসের মতোই
নির্বাক তাকিয়ে থাকি আমি
দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় না কিছুই এ ঝাপসা চোখে আমার


ঘন কৃষ্ণ বর্ণের মেঘে ঢেকে যায় আমার আকাশ
চোখ মেলে সূর্যের একটু হাসি দেখার জন্য
ব্যাকুলতা আকুলতায় শৃঙ্খলহীন হয়ে পড়ে মন
হাতের কাছে আগাছা নুড়ি পেলে আঁকড়ে ধরতে
ইচ্ছে করে তখন


অথচ যাকে মনের মনিকোঠায় ঠাই দিয়েছিলাম
আজ খুঁজে পাইনা তার কোনো চিহ্ন
খুঁজে পাইনা তার টিকিটি এ পৃথিবীর কোণে
অথচ গলেতে যে মালা জড়িয়ে একদিন
চোখে চোখ হাতে হাত রেখে যাকে ভালোবেসেছিলাম
পেলাম না পাশে তাকে এই দূর্দিনে দুঃসময়ে আমার


মানব,তুমি এমন কেনো? তুমি কি আসলেই মানব?
মাঝে মাঝে মনে হয়
যে দু'টি হৃদয় একদিন একাত্মা হয়ে
এক হয়ে বেজেছিলো তানপুরা আর গীটারের তারে
সুরের লহরি তুলে
সুখ সাগরে প্রবাহিত হয়েছিলো যে জীবন তরী
আজ কেনো তিমির আচ্ছন্ন হলো আমার সে পৃথিবী


আজ আমি জেলখানায় গভীর অন্ধকার প্রকোষ্ঠে
ফাঁসির রুজুতে ঝোলার অপেক্ষায় প্রহর গুনছি
সারাক্ষণ
পাশে নেই কেউ আমার
উকুনগুলো চুলের মধ্যে গিজগিজ করছে খেলে
যাচ্ছে অবিরাম
কিন্তু কিছুই টের পাচ্ছি না আমি
মাঝে মধ্যে দু'একটা ঘাড় বেয়ে নেমে আসে
নির্জীব দেহ চষে বেড়ায় আপন খেয়ালে


চোখের অন্ধ গলিতে হেটে বেড়াই আমি
ঠিকানাহীন রাজপথে
প্রাসাদের উদ্দেশ্যে পথ চলি হাজার বছর ধরে
খুঁজে পাই না তাকে আর পৃথিবীর পরে


এতো আপনজন কেনো এমন পর হয়ে যায়?
এই বিপদের দিনে কাকে শোধাবো
আমার দুঃখময় রাতের গল্প
বিষাদের গল্প যে আর শেষ হয় না
আমার রাতের যে ভোর আসে না প্রভাত পাখির
ডাকে


অথচ আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল!