সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ
সুনামগঞ্জ


দুঃখ ভরা মন নিয়ে আজ ঘর ভরেছি সবাই
চোখের জলে ভাসছে আহা তাকানোর যো নাই
নীরবতা আর মৌনতা যে কথা কারো নাই
শুকিয়েছে বেদনায় আঁখি চোখেতে জল নাই ।
হল ভরা সব উকিল -জজে নাইরে মুখে কথা
প্রিয় জনের হারিয়ে যাবার এ যে বিয়োগ ব্যথা
কষ্টের কথা হয়নারে শেষ একের পরে এক
করছে সবাই স্মৃতিচারণ দ্যাখরে সবাই দ্যাখ্।


আইন লড়াইয়ে নির্ভীক সৈনিক ছিলো সবার সাথে
বন্ধুসহ জুনিয়র সিনিয়র ব্যথায় যে আজ কাঁদে
ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে সবাই কথা বেরোয় না
উজ্জ্বলতা স্মৃতির কোনো ম্লান যে হয় না ।
জীবন সাথী 'মুনমুন কবি'র যতো  না কাব্য গাথা
দান করেছে সাথী রে সে নেই যে কোনো কথা
কোর্ট থেকে ফিরে ঘরে কবি দরোজা খোলো
ডাকবে না কেউ মুনমুন ব' লে প্রদীপ নিভে গেলো।


মা 'দিয়া' তুমি কেমন আছো খেয়েছো কিছু মা
তুমি যে মা না খেলে আমার খাবার ঢোকে না
কাপড় চোপড় টাকা পয়সা দ্বিধা নাহি করে
নিবা তুমি আমার থেকে আমি যে তোমার ছেলে। 
বলবে না আর কেউ কখনো  মাগো কেমন আছো
সাবধানে মা থেকো তুমি জানবো ভালো আছো
তুমি আমার অপার আশা তুমি যে আমার প্রাণ
চলছি মাগো পরপারে ভালো থেকো মোর জান।


দীপ আমার বিদেশ থাকে থাকে সেথায় একা
যাচ্ছি বাবা দীপকে ছেড়ে আর হবে না দেখা
ঠিক মতো বাবা আমার খাবার খেও তুমি
খাবার নিয়ে করলে হেলা কাঁদবো সেথায় আমি ।
সমবেত সবাই হলে বসে গেছি ভাই
শোকের কথা ব'লে যেনো শোককে ভুলে যাই
হারিয়ে গেছে বীরযোদ্ধা বজলুল মজিদ খসরু
কোথায় রাখবো দুঃখ আর কোথায় রাখবো অশ্রু।


হাসিখুশী মিষ্টভাষী লোকটা মাঝে মাঝে
বলতো হেসে স্যার আমার একটু কথা কাছে
মায়াভরা স্বভাব তাঁহার নরম মনের সুর
বলতো সবাই মহৎ হৃদয় হৃদয় মধুপুর।
শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির তিনি বাংলা মায়ের গৌরব
জাতির জন্য যুদ্ধ করে ছড়ালেন ফুলের সৌরভ
দেশের তরে লড়েছেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা
মুক্তিযোদ্ধা জাতির সম্পদ জানেন সকল বোদ্ধা।


দেশ হতে দেশ দেশান্তরে ঘুরেছেন তিনি কতো
ঘুরে ফিরে দেশের মায়ায় ফিরেছেন ইচ্ছে মতো
সিনিয়র ল-ইয়ার ছিলেন তার ছিলো না অহংকার
সবার চোখে ছিলেন তিনি বারে'র অলংকার।
নরম দরম স্বভাব তাহার অমায়িক ব্যবহার
তাহার গুণের কাছে তাই মানতো সবাই হার
সেক্রেটারি প্রেসিডেন্ট আর পিপি ছিলেন তিনি
পাবে না কেউ এমন মানুষ পাপুয়া নিউগিনি ।


মিষ্টি মধুর সাবমিশন তার স্যার একটু শোনেন
আইনে যা আছে না হয় তাই- ই হুজুর ক'রেন 
রুচিবান এক মানুষ তিনি দেখলে তাহার বাড়ি
দেখবে সবাই দাড়িয়ে আহা রুচির যে নাই জুড়ি।
হরেক রকম বই সাজানো সেল্পে তাহার ঘরে
আইনের বই নয়তো শুধু দেখলে নয়ন ভরে
ছেলে থাকে বিদেশে আর মেয়ে এখন ঢাকায়
শূন্য ঘরে 'মুনমুন' কেনো কাঁদছে একা বাসায়।


এলএল-বি অনার্স পাস করে মেয়ে 'দিয়া' ঢাকায়
করছে প্রাকটিস বড়ো কোর্টে বাবার স্বপ্ন দেখায়
ছেলে আছে বিদেশে আর আছে অনেক ভালো
বাবা নাইরে তাদের আজ বাসবে কে আর ভালো।
ভালো মানুষ চলে গেলো ছেলেমেয়ে রেখে
'মুনমুন' আজ ঘরে একা রেখো তাদের সুখে
কেমন করে সইবে  সকল ব্যথা ভরা মন
কবি'র মনে থাকে ব্যথা থাকে সারাক্ষণ।