অনেক দিন পরে নীলার সাথে
লেকের পাড়ে দেখা
লাল শাড়ী লাল ব্লাউজের চমৎকার ঝঙ্কার তুলে দাঁড়িয়ে ছিলো সে
আজ তার পুরো গেটআপটাই ছিলো অন্য রকম
একদম চোখে পড়ার মতো
তাকে দেখার পর মাধবী লতার আনন্দের দোল ও
স্বাভাবিক ছন্দতাল আরও  সজীব হলো


ঝড়ো হাওয়া ফিসফিস করে বলে গেলো কানে
নীলা ও তোমার কাঙ্ক্ষিত সময় আজ বৈরী 
আকাশে মেঘের গর্জন
হবে আজ ভারী বর্ষণ
আজ তোমাদের যাত্রা হবে না সুগম
প্রকৃতি আজ বিরূপ তোমাদের ওপর।


কাজল চোখের নীলার দিকে চেয়ে চেয়ে আমার
সবটুকু দুপুর বিবশ হয়ে কেটে গেলো
শিরায় শিরায় দহনের চিতা জলতে জলতে
প্রকৃতির তুমুল মেঘ বৃষ্টিতে আমাদের মধ্য দুপুর ভেসে গেলো জলের খেয়ায়
জলের কণা আলতো করে নীলার গাল ছুঁয়ে গেলো
এই বরষায় কেঁপে উঠলো তার হৃদয় জলাভূমি


মেঘের গর্জন আর বজ্রপাতের শব্দের আঘাতে বারবার কান চেপে বাঁচতে চাইলো নীলা
পদ্ম পুকুরের মতো চোখ দিয়ে নীলা আমাকে
থথ্থর করে কাপাতে লাগলো


তার বুকের তীব্র দাবির মিছিলের স্লোগানে নির্বাক নিস্তব্ধতায় আমার আকাশ ভেঙে খান খান হয়ে যেতে লাগলো
শুধু মেঘ বৃষ্টি ঝড়ের জন্য


থমকে গেলো একেবারে আমার বুকের বাঁ পাশ
প্রকৃতি অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে নিষ্প্রভ আমাকে ও কাঁদিয়ে গেলো
আকাশের সমস্ত ঢল বর্ষন এদিন আছড়ে পড়লো
পৃথিবীর বুকে


অথৈ জলের ডুব সাঁতারে ভেসে যাচ্ছিলাম আমরা
জল ছল ছল কাজল চোখের কন্যা নীলার চোখে সুলতান একে দিলো তখন তুমুল ঝড়-বৃষ্টির চিত্র


আটকা পড়ে গেলাম শতো সহস্র মানবের কোলাহলে
দুরুদুরু কাঁপছিলো মন
কাঁদছিলো শূণ্য চোখের কোণ
বুকের গহীন জুড়ে আমার সময় নিঃশব্দ নির্জনে
ভেসে চলে গেলো
বিষাদে পুড়ে নীলার বুক জুড়ে কাঁদতে থাকলো নীলার বিরহী সেতার


একদিকে প্রকৃতির সীমানা চিরে ভেঙে পড়লো আকাশ
আর আমরা ও মানব প্রাচীরের আঁধারে ঢেকে যেতে থাকলাম
পুরো আকাশটাই ভেঙে পড়লো নীলার মাথার ওপরে


একেবারে নীল হয়ে বিষন্ন বদনে ফিরে গেলো নীলা
ঐ দূর পথের সীমান্তে নিমেষেই অদৃশ্য হয়ে গেলো সে
আমার দৃষ্টির সীমানার বাইরে


হাতের ভেতর হাত রাখা
পায়ের সাথে পা রাখা
খুনসুটি তে মেতে থাকা
চোখের ভেতর ডুবে থাকা


নীলার জন্য আর হলো না!