অভিজাত তাঁতবস্ত্র আর জামদানীর সব কথা
মিশে আছে সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যে সব তথা।
বিশ্বশ্রুত মসলিন শাড়ী বিলুপ্ত যখন প্রায়
দাড়িয়ে গেলো পাশে এসে জামদানী শাড়ি তায়।


অপরূপ সৌন্দর্য্যের রূপবতী সব নারী
সৌন্দর্যময় করতে আরো জামদানী দেয় ছাড়ি।
হাজার হাজার পংক্তি মালা কবিরা সব লিখে
হয়েছিলো চিরঞ্জীব সব ললনাদের বুকে।


হাজার হাজার নারী তাদের স্বামী সবার কাছে
বলতো চলো যাই দোকানে জামদানী তো আছে।
দাবীর পরে দাবি তাদের দাবীর তো নাই শেষ
কিনে দিলে জামদানী তার মুখেই হাসি বেশ।


শতো শতো জামদানী আর হরেক রকম ফুল
গোলাপ পোনা শাপলা জুই আর ছিটার গুটি ফুল।
শখে পাগল জেমস্ টেলর দুইশো বছর আগে
ছুটে গেলেন রূপগঞ্জে তার শাড়ীর অনুরাগে।


আজকে সে সব স্বপ্ন কথা স্বপ্নেই শোনা যায়
জামদানী শিল্পীর সংখ্যা আজি শেষের পথে হায়।
পচাত্তরে উনিশ সালে ছিলো এক লাখ ত্রিশ
আজকে সেথায় আছে মাত্র হাজার পাঁচ শো বিশ।


রাজা বাদশাহ জমিদারের সুন্দরী সব নারী
পরতো আগে রূপের লাগি জামদানী সব শাড়ী।
এখন পরে ধনীরা আর অভিজাত নারী
কিন্তু তারা জানে না কার কষ্টে হৃদয় ভারী।


দুঃখ কষ্ট লুকিয়ে আছে শাড়ীর ভাঁজে ভাঁজে
রমনীরা জানে না তা শুধু ই তারা সাজে।
প্রতিটি সুতার ফাঁকে রয়েছে তাদের ঘাম
কষ্টে ভরা জীবন নিয়ে করছে তারা কাম।


লোকচক্ষুর অন্তরালে গরীব তাঁতীর কথা
থাকে সারা জনম ভরে হৃদয়ে নিয়ে ব্যথা।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তৈরী করে শাড়ী
স্ত্রী বোনের ভালে তবুও জোটে না এ শাড়ী।


এক চিলতে শাড়ীর আশে পাশে বসে থাকে
দিচ্ছি দিচ্ছি বলে তাদের অপেক্ষা তে রাখে।
তিন চাট্টে সস্তা শাড়ী মাসে মাসে বুনে
স্বল্প দামে বেচে তারা জীবনের দাম গোণে।


স্বপ্ন মরার যন্ত্রণাতে সকল তাঁতি আজ
দিশেহারা সবাই তারা নাইযে তাদের কাজ।
কেমন করে বাঁচবে তারা করবে কি সব কাজ
প্রশ্ন বড়ো সবার তারই উত্তর নাহি আজ।


স্বপ্ন দেখে কাঁদে সকল তাঁতীরা সব মিলে
তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ হবে অভাব যাবে ভুলে।
সুখী জীবনের প্রত্যাশার ঐ আসে না আর ভোর
স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন ই থাকে কাটে না আর ঘোর।


পেটটা ভরে পায় না খেতে শিল্প মরার পথে
খোঁজ রাখে না কেউ যে তাদের শিল্পীরা আজ রথে।
স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হোক না তাঁতীর কাজ
বিকশিত হোক না আরো উৎকর্ষ তার আজ।


বাংলো
জেলা ও দায়রা জজ
সুনামগঞ্জ


প্রকাশ কাল
সময়ঃ০৬-০৬মিঃ
তারিখঃ১৭-০৭-২০২০ইংরেজী