অমূল্য ধন
এমভি জমজম ঢাকা হইতে চাঁদপুর
সময় হইতেই ছাড়ল ঘাট করে সাইরেনের সুর
মনে মোর চলিছে প্রশ্ন, চাঁদপুর কতদূর?
নদীর দু'পাশ জুড়ে কত কারখানা
একে একে কেন উঠছে এতো ঢেউ নেই মোর জানা
সূর্যালোকে রূপালী জল যেন পয়সা আনা আনা।
এথায় হেথায় ভাসছে ছোট ছোট কচুরীপানা
মুন্সীগঞ্জের ঘাট আসতেই থামল লন্চখানা
হকাররা দৌড়ে আসল নিয়ে কলারপানা।
বলছে কি! রুটি দশ কলা দশ আমডা দশ
আরো আছে মজার মজার জাম্বুরার কোষ
খেতে মজা আরো রসে ভরা আম টসটস।
লন্চ গেলো মাঝ নদীতে
খেলছে কয়জন মনের সুখে তাস মেঝেতে
একটু পরে নামতে হবে নেই তাদের মনেতে।
যাত্রা শেষে নোঙর হলো ঘাটের উপর
চেকাররা ছিঁড়ল টিকেট নিয়ে পরপর
ঘাটের কোনে এক বৃদ্ধা মা বলল, বাবা আমায় ধর।
হাত বাড়াতেই দেখলাম মায়ের চোখ টলটল
এই বুঝি পড়বে বেয়ে শ্রোতের ন্যায় জল
বললেন, তোর মত ছিলো মোরও যে এক চাওয়াল।
বড় হয়ে পুত্র মোর হইল লাকপান
বিয়ে থা'র পরে বউ দিলো পড়া দু'কান
পুত্র মোরে দিল তাই নির্দয় হয়ে পিটান।
কাঁদিতে কাঁদিতে এলাম শেষে এঘাটে
ছেড়েছুডে স্বামীর ভিটেমাটে
করি ভিক্ষা এখন মুই বাঁচার তাগিদে।
দু'চোখ বেয়ে পড়ল মোর জল
একি করুন হলো এক মায়ের হাল
এ কেমন রীতি বিধির কেমন যে চল।
বাবা-মা কতো বড় অমূল্য ধন
যদি পারিত বুঝিতে সন্তান
তব রাখিয়া গৃহে করিত দিবারাত্রী যতন।