আমাদের মাষ্টার মশাই নাম তার তাহের আলম
জাতি গঠনের উদ্দেশ্য নিয়ে হাতে তুলে নিল বই-খাতা-কলম
আজীবন সে শিক্ষার্থী শিক্ষাও দিতে চায় সবাইকে
বেছে নিলো মহৎ পেশা ছুটি দিলো আর সব চাকুরীকে
শিক্ষকতার চেয়ে মহৎ আর কিছু নেই এই দুনিয়াতে
মান এবং হুসে মানুষগুলো মানুষ হয়ে ওঠে শিক্ষার আলোতে
শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে জীবন করবে আলোকিত
এই আশাতেই তাহের আলম শিক্ষকতায় হলো দীক্ষিত।


দিন যায় রাত যায় স্বপ্ন দেখে শিক্ষক তাহের আলম
সঙ্গী হয়েছে জীবনে তার শুধু বই-খাতা আর কলম
এভাবেই কি কাটবে কাল আরও কিছু তার চাই
আসমাকে এ জীবনে চাই আর কিছু বা না পাই
চলার পথে এতোদিন তাহের আলম ছিল শুধু আপনাতে
অবশেষে আসমাকে সঙ্গী করে ঘর বাঁধল দুজনাতে
চারিদিকে শুধু আনন্দ আর আনন্দে দিন কাটে
জানতো না সে আসমাতে এতো সুখ লুকিয়ে আছে দিনে-রাতে।


দিন যায় রাত যায় সময় শুধু অতিবাহিত হয়
তাহের আলমের সব সুখ আসমাতে মিশে রয়
দিবা-যামিনীর চলাচলে আস্তে আস্তে বছর ঘুরে যায়
শিক্ষক তাহের আলম শিক্ষকতার মাঝে আনন্দ খুঁজে পায়
মাঝে মাঝে ভাবে সে,এ জীবনে এলো সুখ কারণে আসমার
যা কিছু চাওয়া পাওয়া হলো,সবই যে উৎসাহ তার
এভাবেই কি যাবে দিন কিসের অভাব যেন লাগে তার
পূর্ণতা এলো অবশেষে জীবনে,বাচ্চা দুটো জন্মাবার পর।


এখন শিক্ষক তাহের আলম শুধু স্বপ্ন দেখে অবিরল
সন্তান তাদের কিভাবে মানুষ হবে,পাবে তাদের সুফল
স্বপ্নে স্বপ্নে দিন কেটে যায় আসমা আর তাহেরের
কেউ বানাতে চায় ডাক্তার,কেউ ইঞ্জিনিয়ার বা পাইলট বিমানের
অভাগা তাহের আলম দিনে দিনে ব্যয় বাড়ে তার
কিন্তু আয় থেকে যায় সীমাবদ্ধ বাড়ে না কিছুতে আর।


দিনে দিনে আশাগুলো শুধু খসে পরতে থাকে
এখন সে দেখতে থাকে মধ্যবিত্ত অনুভবে জীবনটাকে
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় চাল-ডাল সব,বাড়ে শুধু অভাব
বেসরকারী স্কুলের শিক্ষক সে তাই পালায় তার খাব্
এখন শুধু খেয়ে পরে বেঁচে থাকাই হয়েছে সার
কোনোমতে চায় সে শুধু ছেলেদের লেখাপড়া করাবার
বউ তার থাকে শুধু গোমরামুখো হয়ে নিশিদিন
চাহিদা তার মেটাতে পারে না তাহের আলম সামর্থ্যহীন।


চাওয়া আর পাওয়ার ব্যবধান থেকে যায় বিস্তর
বউ-ছেলেদের কাপড় খাবার করতে পারে না জোগাড়
যদিও কিছু দিতে পারে তাতে সন্তুষ্ট নয় তার ছেলেরা
কারণ এক-দুই করে দিনে দিনে হয়েছে বড় তারা
চাহিদার নেই শেষ মুদির দোকানে ক্রমশঃ ধার বাড়ে
বাকীর খাতা বাড়তে থাকে মহাজন এসে ডাক পারে।


আরও কত অসুবিধা তাহের আলমের বলে করা যায় না শেষ
তবে কেন শিক্ষক হলাম ব্যর্থ জীবন হায়,ভাবে সে অবশেষ।
০৮.০১.২০০৫