পলেস্তানার রঙ খসে যায়
---------
রমেন মজুমদার


স্ত্রী :-
এই, কোথায় তুমি গেলে
যায়নি কথা কর্ণে ?
লাউয়া ট্যপা সাপের মত
সাজছ নানান বর্ণে।।


স্বামী :-
ভুল বুঝলে সুন্দরি
একটু ওদিক ঘুরে
সুখটানেতে হুক্কুর হুক্কুর
বুকটা গেছে ধরে ।।


স্ত্রী :-
সেইনা কবে বলছি তোমায়
বদ অভ্যাসটা ছাড়ো,
এবার যদি তোমায় ছাড়ি
তুমি,অন্য মেয়ে ধরো।।


স্বামী:-
সবাই জানে তুমি আমার,
আমিই তোমার স্বামী,
দুদিন পরে কিনে দিব
হীরের গয়না মস্ত দামী।।


স্ত্রী:-
জানা আছে পুরুষের ঠাঁট্
বিয়ের আগেই গল্প;
দিচ্ছ না তো কিছুই কিনে
এখন,-কিম্বা অল্প-স্বল্প।।


স্বামী:-
বল,এবার কোথায় যাবি ?
সিঁদুরের দাগ লাগিয়ে দিছি ভালে;
এ' জনমে জুটবে না কেউ
আমার মত,তোর কপালে।।


বের করেছি ঘর হতে তোরে,
প্রেম ছিল সেই নকল আমি
কিল ঘুষি চড় ভাগ্যেতে তোর
আছে; অধম হলেও আমি স্বামী।


স্ত্রী :-
নারী বলেই তুচ্ছ করো,
ভাত কাপড়ে মুরোদ নাই ..
বিয়ের আগে হুস ছিলনা
আমায় কেন দিলে ঠাঁই ?


প্রেমের মোহে ভুলের পথে
পা ' বাড়িতে ঠকলাম আমি!
ভাবছি তোরে সরল সোজা ...
দেখছি এখন, বিপথ গামী।


রঙ ধরেছে তোর মনেতে
অন্য কোনো নারীর মোহ...
মদ -জুয়াতে বিভোর থাকিস
ঝগড়া করিস অহরহ ।।


স্বামী:-
চ্যাট্যাং চ্যাট্যাং মুখের বুলি
মারব ঘুষি মুখ পেঁচিয়ে.
করব এবার ঘরের বাইর
দেখবি মজা বাইরে গিয়ে।।


কে নিবে তোর দায়িত্ব রে
ভাত-কাপড়ের নিজ খরচে?
স্বামীর বাড়িই শেষ ভরসা !
রাখিস মনে বুদ্ধি বেঁচে ।।


স্ত্রী :-
গোল্লায় গেছে প্রেমের বুলি
গেছিস ভুলে পিছন কথা;
চরিত্রটাও গুলিয়ে খে'লি,
নেশায় খেয়েছিস নিজের মাথা।।


রইলরে তোর আদর-বাদর
ঘর সংসারের জারিজুরি;
চললাম আমি জন্মের মত
চির চেনা সেই বাবার বাড়ি।


যে স্বামীটা নেশার মধ্যেই
কাটায় দিনরাত আলসে একা,
তার কাছে কি আশা করি ?
কপাল আমার ভাগ্যে লেখা।।


সাধ করে ঘর বানিয়েছিলাম
রঙ বাহারে লাগিয়েছি রঙ !
সাজানো সেই নিজের ঘরেই
পলেস্তনায় ধরছে জং !!


এই কি জীবন নারীর ভাগ্যে
আমার মত কয়জন আছে ?
মিটেছে প্রেম, স্বাদের স্বামী
ক'দিন বাঁধা,সে ঘর পাছে!!!


হয়না যেন কারো ভাগ্যে
আমার মত ভাঙ্গা কপাল !
জীবন শুধু ভাত কাপড়েই ?
যুক্ত থাকা; যৌবতী ঢাল!!


ঝরা পাতার মতোই আমি
পথের ধুলায় নিষ্পেষিত !!
হায় রে জীবন ? দুর্ভাগা নারী
হয়না কারও ভাগ্যে প্রিত।।।
----